|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স-   ১৬২/৭ (২০ ওভার) (বাবর ৪৭, ফজলে রাব্বি ১৪, সোহান ৪৬)

সিলেট স্ট্রাইকার্স-    ৫৪/৭ (১৩ ওভার) (টেক্টর ৬, শান্ত ১, জাকির ৪, বার্ল ১৬*; সাকিব ২/৩, মেহেদী ২/৬)

হারের পথে সিলেট

বিপিএলের এবারের আসরে প্রথম ওভারে উইকেট হারানো যেন সিলেটের জন্য রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য ম্যাচের মতো এদিনও প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় তারা। শামসুর রহমান শুভর জায়গায় ওপেনিংয়ে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি হ্যারি টেক্টর। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে লেগ সাইডে টেনে খেলতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন ৬ রান করা এই ব্যাটার। পরের ওভারে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। 

ব্যাট হাতে ভুগতে থাকা শান্ত এদিন শেখ মেহেদী হাসানের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। তাতে টানা ছয় ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া শান্ত রংপুরের বিপক্ষে ফিরলেন মাত্র ১ রানে। সিলেটের বিপদ আরও বাড়িয়েছে জাকিরের বিদায়। মেহেদীর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করতে চেয়েছিলেন জাকির। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি তিনি। বল গ্লাভসবন্দি করেই ততক্ষণাৎ উইকেটের বেল ফেলে দেন সোহান। 

সামনের পা বাইরে থাকা অবস্থায় পেছনের পা মুহূর্তের জন্য ‍উপরে তুলেছিলেন জাকির। তাতেই স্টাম্পিং হয়ে ফিরতে হয় ৪ রান করা জাকিরকে। গত ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করলেও রংপুরের বিপক্ষে থিতু হতে পারেননি মিঠুন। সাকিব আল হাসানের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্রেন্ডন কিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন সিলেটের অধিনায়ক। দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ৫৯ রান করা মিঠুন ফিরেছেন ১ রানে। তাতে পাওয়ার প্লেতে ২৩ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় সিলেট।

এরপরও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সিলেট। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে তারা। শামসুর ও আরিফুল ফিরলে দলের রান পঞ্চাশ হওয়ার আগেই ৭ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।

সোহানের ঝড়ের পরও রংপুরের ১৬২

বিপিএলের এবারের মৌসুমে ব্যাট হাতে জ্বলেই উঠতে পারছেন না ব্রেন্ডন কিং। বেশিরভাগ ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ব্যাটার। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে কিং ফিরেছেন মাত্র ১ রান। সামিত প্যাটেলের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন তিনি। কিং ফিরলেও ফজলে রাব্বিকে সঙ্গে নিয়ে রংপুরকে এগিয়ে নিতে থাকেন বাবর আজম। শুরুতে উইকেট হারালেও পাকিস্তানের এই ওপেনারের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে দাপট দেখিয়েছে রংপুর।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর অবশ্য রান তোলার গতি কমে একবারের চ্যাম্পিয়নদের। চাপে পড়ে রান তুলতে গিয়ে উইকেট দিয়েছেন ফজলে রাব্বি। হ্যারি টেক্টরের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে থাকা রায়ান বার্লের হাতে ধরা পড়েছেন ১৪ রান করা এই ব্যাটার। পরের বলে সাকিব আল হাসানকেও ফিরিয়েছেন টেক্টর। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্কুপ খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব।

ব্যাটে-বলে করতে না পারায় বল আঘাত হানে সাকিবের প্যাডে। আম্পায়ার আউট দেয়ার পর বাবরের সঙ্গে আলাপ করে রিভিউ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বাবর আগ্রহ না দেখানোয় সোজা ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটতে শুরু করেন রানের খাতা খুলতে না পারা বাঁহাতি এই ব্যাটার। যদিও পরবর্তীতে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বলের ইম্প্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। অর্থাৎ রিভিউ নিলেই বেঁচে যেতে গোল্ডেন ডাক মারা সাকিব।

এদিকে উইকেটে থিতু হলেও হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি বাবর। সামিতের গুড লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ৪৭ রান করা এই ব্যাটার। বাবরকে হারালেও রান তুলতেই ব্যস্ত ছিলেন নুরুল হাসান সোহান এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এদিন শুরু থেকেই তাণ্ডব চালানোর চেষ্টা ছিলেন আফগানিস্তানের ওমরজাই। তবে তাকে ফিরিয়ে বিপদ মুক্ত করার চেষ্টা করেন আরিফুল হক। 

ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার ডেলিভারিতে লং অফের উপর খেলতে গিয়ে টেক্টরের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। তাতে করে আজমতউল্লাহ ফেরেন ১৪ বলে ২২ রান করে। তবে থেমে থাকেন না সোহান। দলের পুঁজি বড় করতে নিয়মিতই বাউন্ডারি মারতে ব্যস্ত সময় পার করেন। তবে বাবরের মতো তিনিও হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। রেজাউর রহমান রাজার বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে টেক্টরের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৪৬ রান করা রংপুরের অধিনায়ক। শেষ দিকে অবশ্য খুব বেশি রান তুলতে পারেননি মোহাম্মদ নবি ও শামীম। তাতে ১৬২ রানে থামে রংপুর।