ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইসলামী বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরীর একটি ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাহেরীকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ঘটনায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন, নিলাখাদ গ্রামের হানিফ মিয়া (৬০), মোগড়ার গোলাম সামদানী শিবলী (৫০) এবং একই এলাকার রিমন মিয়া (২১)। শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয় এবং শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আখাউড়ার নিলাখাদ গ্রামের ধনু মিয়ার বাড়ির সামনে একটি জমিতে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ জানায়, কোনো অনুমতি ছাড়াই এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তা মুফতি তাহেরী জনতাকে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন, যা পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে।

খবর পেয়ে মোগড়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিট অফিসার এসআই আবির আহমেদ এবং এসআই মো. বাবুল মিয়া পুলিশের একটি দল নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পুলিশ পৌঁছানোর পর তাহেরী মঞ্চ থেকে বলেন, “আমার মাহফিলে বারবার পুলিশ আসে বাধা দিতে। এবার আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সুন্নি জনতা কাউকে ছাড় দেবে না।”

তার বক্তব্যের পরপরই উত্তেজিত জনতা লাঠি, ইটপাটকেল নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। হামলায় এসআই বাবুল আহত হন এবং তাকে চিকিৎসা নিতে হয়।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমি উদ্দিন বলেন, "তাহেরীর বক্তব্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"

তিনি আরও জানান, "অনুমতি ছাড়া মাহফিল আয়োজন এবং জনতাকে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া আইনশৃঙ্খলার জন্য বড় হুমকি। আইন অনুযায়ী এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"

ইসলামী বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত তাহেরী আগেও বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তবে এই ঘটনায় তার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা দুই ভাগে বিভক্ত—এক দল তাহেরীর বক্তব্যকে সমর্থন করছেন, অন্য দল তার বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে। পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকায় এলাকায় এখনও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।