ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর ক্রীড়া বিভাগের বর্ষীয়ান সাংবাদিক মাহমুদুল হক আর নেই। গতকাল রাতে রাজধানীর শনির আখড়ায় নিজ বাসায় হৃদরোগজনিত জটিলতায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫০-এর বেশি।

মাহমুদুল হক দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন, যার প্রভাব পড়ে তাঁর কিডনি এবং হৃদযন্ত্রে। এ ছাড়া তিনি আরও কয়েকটি জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অসুস্থতার কারণে তাঁকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। শারীরিক এই অবস্থার কারণেই তাঁর কর্মজীবন এবং সামাজিক মেলামেশা ক্রমেই সীমিত হয়ে পড়ে।

মাহমুদুল হক ছিলেন বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসজেএ) সিনিয়র সদস্য। সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমে তিনি নিয়মিত অংশ নিতেন। সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক এবং সদা হাস্যোজ্জ্বল আচরণ তাঁকে সবার কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। তাঁর পান খাওয়ার অভ্যাসের কারণে ঘনিষ্ঠজনেরা ভালোবেসে তাঁকে ডাকতেন ‘পান মাহমুদ’ নামে।

মাহমুদুল হকের জীবনের বড় অংশ কেটেছে পরিবার এবং কর্মক্ষেত্রকে ঘিরে। মাঠে-ময়দানে তাঁর উপস্থিতি কম থাকলেও সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে তিনি বরাবরই সচেষ্ট ছিলেন। তবে অসুস্থতার কারণে গত কয়েক বছরে এই যোগাযোগ অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে যায়।

গতকাল ঢাকায় রাত ১১টায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর মরদেহ নিজ জেলা শেরপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ সেখানে আরেকটি জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

মাহমুদুল হকের আকস্মিক মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকর্মীরা এই মৃত্যুকে সাংবাদিকতা অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে দেখছেন।

ক্রীড়া সাংবাদিকতার জগতে মাহমুদুল হক ছিলেন সবার প্রিয় একটি মুখ। তাঁর অকাল প্রয়াণে শূন্যতা তৈরি হলো, যা সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মনে দীর্ঘদিন বয়ে বেড়াবে।