গত নভেম্বরে সড়ক, রেল ও নৌপথে সংঘটিত দুর্ঘটনায় ভয়াবহ প্রাণহানি ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এ মাসে দেশে মোট ৪৮৬টি দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে নিহত হয়েছেন ৫৮২ জন এবং আহত হয়েছেন ৮১৯ জন।

নভেম্বরে শুধু সড়কপথেই ৪১৫টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারান ৪৯৭ জন, আহত হন ৭৪৭ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ছিল সবচেয়ে বেশি, যার সংখ্যা ১৬৭। এ দুর্ঘটনাগুলোতে ১৯২ জন নিহত ও ১১১ জন আহত হয়েছেন।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে ১০৬টি দুর্ঘটনায় ১২৯ জন নিহত ও ২৬৪ জন আহত হন। অন্যদিকে ময়মনসিংহ বিভাগে ছিল সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা, যেখানে ২২টি ঘটনায় ২৭ জন নিহত এবং ৪৫ জন আহত হয়েছেন।

রেলপথে নভেম্বরে ৬৪টি দুর্ঘটনায় ৭৯ জন নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ঘটে ৭টি দুর্ঘটনা, যেখানে ৬ জনের মৃত্যু, ২৯ জন আহত এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ:

চালক: ২৫৩ জন

নারী: ৬৭ জন

শিশু: ৩৫ জন

শিক্ষার্থী: ৫৭ জন

সাংবাদিক: ৭ জন

রাজনৈতিক কর্মী: ১০ জন

মুক্তিযোদ্ধা: ২ জন

এছাড়া চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং পরিবহন শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ নিহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনার কারণ ও ধরন

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

গাড়ি চাপা দেওয়া: ৫০.১২%

মুখোমুখি সংঘর্ষ: ২১.৬৮%

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়া: ১৮.৩১%

অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনার এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

নভেম্বরের এই পরিসংখ্যান দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাকে প্রকাশ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা না হলে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না।