ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

পরিস্থিতি উত্ত**প্ত, ব্যাপক সং*ঘ*র্ষ, ভা*ঙ*চু*র ও লু*টপা*ট, ৩৫ বাড়িতে আগুন, র‌্যাব মোতায়ন

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ১৯ ২২:০৬:২৭
পরিস্থিতি উত্ত**প্ত, ব্যাপক সং*ঘ*র্ষ, ভা*ঙ*চু*র ও লু*টপা*ট, ৩৫ বাড়িতে আগুন, র‌্যাব মোতায়ন

পাবনার ঈশ্বরদীতে খাস জমি দখল ও নির্বাচনী বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে হওয়া এ সহিংসতায় বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তরিকুল ইসলাম শেখ (২৬) গুরুতর আহত হয়েছেন। পাল্টা প্রতিশোধে বিএনপি সমর্থকরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ৩৫টি বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে জানা গেছে।

বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের দুর্গম চরগড়গড়ি এলাকায় জমি দেখতে যান বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে তরিকুলের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে তার পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয় এবং হাঁটুতে মারাত্মক আঘাত করা হয়।

আহত অবস্থায় তরিকুলকে প্রথমে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এই ঘটনার জেরে তরিকুলের স্বজন ও বিএনপির সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়। লক্ষ্মীকুন্ডার নসিরের ঘাট এবং চরগড়গড়ি এলাকায় কমপক্ষে ৩৫টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুল ইসলাম মেম্বার, আলামিন প্রামাণিক, আকুব্বার প্রামাণিকসহ আরও কয়েকজন।

আহত তরিকুলের বরাত দিয়ে বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম প্রামাণিক অভিযোগ করেন, “তরিকুল জমি দেখতে গেলে পরিকল্পিতভাবে তার ওপর হামলা চালানো হয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।”

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের নেতারা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের দাবি, “আমরা অনেক আগেই এলাকা ছেড়ে গৃহবন্দি অবস্থায় আছি। জমি দখলের বিরোধে বিএনপির মুকুল গ্রুপ নিজেরাই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।”

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও শুরুতে পরিস্থিতির অবনতি এবং নিরাপত্তার অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পরে র‌্যাবের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঈশ্বরদী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি এখন শান্ত। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।”

ঐ এলাকায় কয়েক হাজার একর সরকারি খাস জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ জমি নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয় বলে জানা গেছে।

জমি দখল ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেকে সৃষ্ট এই সংঘাত স্থানীয় জনগণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ভুক্তভোগীরা দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।

রাজনৈতিক সহিংসতার এই ঘটনা শুধু স্থানীয় শান্তি নয়, বরং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপরও বড় প্রভাব ফেলেছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে