বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড নিয়ে অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি এখনও কাটেনি। দুই মাস আগে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে সিলেকশন প্যানেল, গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নেতৃত্বে, দলে কিছু অনিশ্চয়তা ছিল। তবে, তিনটি ম্যাচের পরও এ অনিশ্চয়তা কিছুটা বহাল রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, এই অবস্থায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য স্কোয়াড কিভাবে চূড়ান্ত করা হবে?

স্কোয়াডের মোট ১৫ জনের মধ্যে ১০ জনের উপস্থিতি প্রায় নিশ্চিত, তবে কিছু পজিশন এখনো খালি। স্কোয়াডের ৫টি স্ফট নিয়ে লড়াই চলছে ১০ জনের মধ্যে। এখানে কিছু খেলোয়াড় নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং কিছু এখনও বাকি রয়েছেন।

ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে তানজির তামিম এবং জাকের আলী অনিকের পারফরম্যান্স নিশ্চিত করেছে তাদের জায়গা। তামিম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার তিনটি ম্যাচে ভালো করেছেন, যেমন প্রথম ম্যাচে ৬০ বলে ৬০ রান, দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৩ বলে ৪৬ রান। জাকের আলী অনিকও চমৎকার পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন, বিশেষ করে শেষ ম্যাচে ৫৭ বলে অপরাজিত ৬২ রান করে।

স্পিনারদের মধ্যে নাসুম আহমেদ এবং রিশাদ হোসেনের মধ্যে লড়াই চলছে। তবে, দুইজনই নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি। রিশাদ তিন ম্যাচে ৪ উইকেট নিলেও তার ইকোনমি ছিল ৬+ এবং তার এভারেজও ৪০। নাসুম আহমেদ এক ম্যাচে ৭ ওভার বোলিং করে ৫৬ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছিলেন, কিন্তু তার পারফরম্যান্সও অতটা মুগ্ধকর ছিল না।

পেস বোলিংয়ের ক্ষেত্রেও কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তানজিম সাকিব এবং নাহিদ রানা—এদের মধ্যে কে স্কোয়াডে থাকবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। শরিফুল ইসলাম একটি ম্যাচে ৬৫ ওভার বোলিং করলেও কোনো উইকেট পাননি, ফলে তার স্কোয়াডে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে। অন্যদিকে, নাহিদ রানা দুটি ম্যাচে দুই উইকেট নিয়ে ভালো পারফর্ম করেছেন, কিন্তু তাকে চূড়ান্তভাবে স্কোয়াডে রাখা হবে কিনা তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।

বিশেষভাবে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তার ফিটনেস এবং ফর্ম নিয়ে শঙ্কা রয়েছে, এবং তিনি খেলবেন কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি স্কোয়াড ঘোষণা পর্যন্ত।

এদিকে, ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কয়েকজনের স্কোয়াডে থাকা প্রায় নিশ্চিত। সৌম্য সরকার, তানজির তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ পাবেন, কারণ তারা সাম্প্রতিক সিরিজে ভালো পারফর্ম করেছেন।

বিশেষ করে, লিটন দাসের পারফরম্যান্সের ওপর কিছু প্রশ্ন উঠলেও, তাকে স্কোয়াডে রাখা হবে এমনটি মনে হচ্ছে। যদিও তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ছয় রান করেছেন, তবে তার সামগ্রিক প্রতিভা এবং ফর্মের কারণে তাকে বাদ দেওয়া হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ, চূড়ান্ত স্কোয়াডে যারা স্থান পাবে, তাদের পারফরম্যান্স বিপিএল ও টেস্ট সিরিজের পর আরো স্পষ্ট হতে পারে। সিলেকশন প্যানেল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, তারা এসব বিষয়গুলোর দিকে বিশেষভাবে নজর রাখবে।

এই সময়ে, বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড নিয়ে সন্দেহ আর শঙ্কা রয়ে গেছে, তবে আসন্ন বিপিএল এবং টিটোয়েন্টি সিরিজের পারফরম্যান্সই হতে পারে চূড়ান্ত নির্বাচনের কিপর্যায়।

আজ তামিমের ফেরা নিয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন,

“তামিম অবসর নেয়নি। নির্বাচকরাই তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। সে যদি খেলার জন্য প্রস্তুত থাকে এবং টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করে তাকে প্রয়োজন, তবে সে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে থাকবে।”

এর আগে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আশার কথা শোনান। তিনি বলেন,

“তামিম মাঠে ফিরেছে, যা ইতিবাচক। বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করেই তার ভবিষ্যৎ ঠিক করা হবে। তবে এখনই কিছু বলা মুশকিল।”

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সম্ভাব্য সের স্কোয়াড:

তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত(অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ/রিশাদ হোসেন, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা/শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।

স্টান্ড বাই: সাইফুদ্দিন, ইবাদত হোসেন, মাহাদী হাসান।