ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

চাঁদপুরে ৭ খুন: জাহাজে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, রোমহর্ষক বর্ণনা দিলো খুনি নিজেই

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ২৫ ১৪:০১:০৪
চাঁদপুরে ৭ খুন: জাহাজে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, রোমহর্ষক বর্ণনা দিলো খুনি নিজেই

চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল বাখেরা জাহাজে ঘটে যাওয়া এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সাতজনকে হত্যা করেছে আকাশ মন্ডল ইরফান নামের এক যুবক। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) র‍্যাবের কর্মকর্তারা এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য জানান। খুনির বক্তব্য অনুযায়ী, ইরফান শুরুতে জাহাজের সকল সদস্যকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করেন। এরপর, মাস্টারসহ সাতজনকে একে একে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেন। তবে জাহাজের সুকানি মো. জুয়েল প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত হন।

র‍্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ইরফান হত্যাকাণ্ডের আগে খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করেন। মাস্টার গোলাম কিবরিয়া সহ অন্যান্য সদস্যরা যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন তাদের গলা কেটে এবং কুপিয়ে হত্যা করেন। নিহতদের মধ্যে ছিল গ্রিজার মো. সজিবুল ইসলাম, লস্কর মো. মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, সালাউদ্দিন, আমিনুর মুন্সী, এবং বাবুর্চি রানা কাজী। একমাত্র জুয়েল প্রাণে বেঁচে গেলেও তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আকাশ মন্ডল ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। তদন্তে জানা গেছে, ইরফান হত্যাকাণ্ডের পর পালিয়ে যায়, কিন্তু র‍্যাব তাকে চিহ্নিত করে এবং গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। জাহাজে খুনির ব্যবহৃত কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে রক্তমাখা চাইনিজ কুঠার, ফোল্ডিং চাকু, স্মার্টফোন, মানিব্যাগ এবং নগদ ৮ হাজার টাকা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মামলার এজাহারে বাদী হিসেবে জাহাজের মালিক মাহবুব মুর্শেদ এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা উল্লেখ করেছেন। তিনি অজ্ঞাতনামা ডাকাতদলকে আসামি হিসেবে মামলা করেছেন। আহত সুকানি জুয়েল ইশারায় জানান যে, আকাশ মন্ডল ইরফান এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। তবে তিনি খুনির ঠিকানা জানাতে পারেননি।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মোহসীন উদ্দিন নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাদেরকে সহায়তা প্রদান করেছেন। নিহতদের প্রতি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডটি একদিকে যেমন রোমহর্ষক, তেমনি এর পেছনের রহস্যও গভীর। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত হতে যাচ্ছে, যেখানে খুনি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে জাহাজের সব সদস্যকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে