বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন একটি দাবি পুরোপুরি গুজব বলে প্রমাণিত হয়েছে। রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই দাবির সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।

ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি গুজবে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় সেনাবাহিনী হাসনাতকে আটক করে ঢাকার নানীবাসে নিয়ে যায় এবং সেখানে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখার পর ছেড়ে দেয়। আরও দাবি করা হয়, তাকে ছেড়ে দেওয়ার আগে দুই ঘণ্টা উলঙ্গ করে ফ্লোরে শুইয়ে বেত দিয়ে মারধর করা হয়।

কিছু পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে চারজন উপদেষ্টা এবং তিনজন জামায়াতপন্থী শিক্ষক সেনাপ্রধানের কাছে গিয়ে অনুরোধ জানালে হাসনাতকে মুক্তি দেওয়া হয়।

রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছে, দাবি করা সময়ে হাসনাত ঢাকায় ছিলেন না। তিনি কুমিল্লার দেবীদ্বারে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। তার ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার ছবি ও ভিডিও স্থানীয় পত্রিকা ‘কুমিল্লা কাগজ’ এবং তাদের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে।

মূলধারার গণমাধ্যমেও দেখা গেছে, ওই দিন সকাল থেকেই তিনি কুমিল্লায় অবস্থান করছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, যা ভিডিও ফুটেজে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সেনাবাহিনী হাসনাতকে আটক করেছে বলে প্রচারিত খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। তাদের মতে, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো একটি গুজব।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের গুজব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে ছড়ানো হতে পারে। কেউ কেউ এটিকে একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন, যা সঠিক তথ্য যাচাই না করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার পর বিশেষজ্ঞরা সবাইকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, নিশ্চিত তথ্য যাচাই না করে এমন কোনো কিছু শেয়ার করা উচিত নয়, যা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

অতএব, সেনাবাহিনীর হাতে হাসনাত আব্দুল্লাহর গ্রেপ্তারের দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। দেশের জনগণকে গুজব থেকে দূরে থাকার এবং সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।