২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া শেনজেন অঞ্চলের পূর্ণ সদস্য হিসেবে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মাধ্যমে শেনজেন ভিসা নিয়ে ইউরোপ ভ্রমণকারী নাগরিকদের জন্য ২৯টি দেশের ভ্রমণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা আগে ছিল ২৭টি। এই ঐতিহাসিক পরিবর্তন ইউরোপ ভ্রমণকে আরও সহজ এবং সুবিধাজনক করে তুলেছে।

শেনজেন অঞ্চল এমন একটি জোন, যেখানে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরা বিনা পাসপোর্ট বা ভিসায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলাচল করতে পারেন। এছাড়া, বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকরা একক শেনজেন ভিসার মাধ্যমে ২৯টি দেশের মধ্যে সীমান্ত চেকিং ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবেন, যা ভ্রমণের ক্ষেত্রে সময় ও জটিলতা কমাবে।

রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া দীর্ঘ ১৬ বছর অপেক্ষার পর শেনজেন অঞ্চলে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হলেও শেনজেন অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তির জন্য একাধিক শর্ত পূরণ করতে হয়েছিল। এই দুটি দেশের শেনজেন অঞ্চলে যোগদানের ফলে পর্যটন খাতে উল্লেখযোগ্য সুবিধা আসবে, পাশাপাশি তাদের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেন জানিয়েছেন, শেনজেন অঞ্চলে এই দুটি দেশের অন্তর্ভুক্তি ইউরোপীয় ঐক্যকে আরও দৃঢ় করবে এবং ইউরোপের অর্থনীতিকে আরও উন্নত করবে।

তবে, কিছু দেশ এই পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে অভিবাসন বৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে। এর পরেও, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার সরকার এটি জনগণের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক এবং উৎসাহজনক হিসেবে বিবেচনা করছে।

শেনজেন অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে এবং এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া ছাড়াও রয়েছে: অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ক্রোয়েশিয়া, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, গ্রীস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিচেনস্টাইন, লিথুয়ানিয়া, মাল্টা, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া, স্লোভাকিয়া, স্পেন, সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ড।

শেনজেন অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার সামনে নতুন চ্যালেঞ্জও থাকবে, বিশেষ করে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং মানব পাচার রোধে। তবে, এই পরিবর্তন ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে, যা তাদের ইউরোপের ২৯টি দেশ ভ্রমণের জন্য সহজ পথ সৃষ্টি করবে।