চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াড ঘোষণার দিনক্ষণ মাত্র পাঁচ দিন বাকি থাকলেও, এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয় বাংলাদেশের একাদশে কারা থাকবেন। বিসিবির তরফ থেকে সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবালের খেলানোর বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তাছাড়া দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং ওপেনার লিটন দাসও রান সংগ্রহে সমস্যায় আছেন। এর মধ্যে তামিমের ফিটনেস এবং সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গুঞ্জন চলছেই।

টিম ম্যানেজমেন্ট এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি যে, তামিম খেলবেন কিনা। তামিমের খেলা নিয়ে বিসিবির মধ্যে চলছে ইঁদুর-বিড়াল খেলা, বিশেষত তামিম প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলে না খেলার পর ফের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে চলছে আলোচনা। তামিম খেলতে চাইলে তাকে স্কোয়াডে জায়গা দিতে হবে, কিন্তু এর জন্য দলের অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে বাদ দেওয়া হতে পারে।

অন্যদিকে, সাকিব আল হাসানও এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন। সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা না থাকায়, তার খেলা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। যদিও সাকিব ইতোমধ্যে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন, তবুও তার স্কোয়াডে জায়গা পাওয়ার জন্য এ পরীক্ষা নিশ্চিত সময়ের মধ্যে পুনরায় দেওয়া হতে পারে।

এর মধ্যে শান্ত ও লিটন দাসের রান খরায় বাংলাদেশের টপ অর্ডারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। শান্ত এবং লিটন উভয়ই ফর্মে না থাকায় তাদের ওপেনিংয়ের পজিশন নিয়ে কিছুটা সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। তবে তানজিদ হাসান, তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার আপাতত জাতীয় দলের সদস্য থাকছেন, যদিও তাদের নিয়ে বিসিবি দ্বিধায় রয়েছে।

তবে আশার কথা, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দারুণ ফর্মে রয়েছেন। আইসিসির বড় টুর্নামেন্টে রিয়াদ তার ধারাবাহিক সাফল্য প্রদর্শন করেছেন এবং ব্যাট হাতে তার দাপট স্পষ্ট। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গেও কোনো সমস্যা নেই, তার অভিজ্ঞতা ও ক্যারিয়ার তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলে রাখার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়েছে।

এছাড়া, মেহেদী হাসান মিরাজ ও জাকির আলি বাংলাদেশ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে চিহ্নিত। পাকিস্তানের মাটিতে তারা দলের জন্য ট্রাম্প কার্ড হতে পারেন। তবে তামিম ও সাকিব যদি খেলতে চান, তবে দলের কিছু বড় নাম বাদ দিতে হতে পারে। ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন রয়েছে, দলের বড় চার তারকা—তামিম, সাকিব, মুশফিক, এবং রিয়াদ—সবাই দলে থাকতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে লিটন অথবা হৃদয় কোনো একজন বাদ পড়তে পারেন।

স্পিন বিভাগেও চমক দেখা দিতে পারে। রিশাদ হোসেন ও নাসুম আহমেদের মধ্যে একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা চলবে। তবে সাকিব আল হাসান খেললে নাসুমের দলে থাকার সম্ভাবনা কমে যাবে, আর সাকিব যদি খেলতে না চান, তবে নাসুম একমাত্র বাহাতি স্পিনার হিসেবে দলে আসবেন।

পেস বোলিংয়ে, মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ তো আছেই, তবে নতুন প্রতিযোগী হিসেবে তানজিম হাসান সাকিবের আগ্রাসী বোলিং স্টাইলের কারণে তাকে দলে নেওয়া হতে পারে। নাহিদ রানা আবার তার গতি দিয়ে বিশ্বমঞ্চে নিজের জায়গা করে নিতে চায়। পেস ইউনিটে হাসান মাহমুদ এবং শরিফুল ইসলামও দলে থাকতে পারেন, তবে এই লড়াইয়ে বর্তমানে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে হাসান।

সবশেষে, ১২ জানুয়ারি স্কোয়াড ঘোষণার দিন, বাংলাদেশের একাদশে কাদের জায়গা হবে, সেটাই দেখার বিষয়। বিসিবি তাদের সিদ্ধান্ত জানালে ক্রিকেটপ্রেমীরা চূড়ান্ত দল নিয়ে অপেক্ষায় থাকবে।