নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বর্নো রাজ্যের ডুম্বা গ্রামে ইসলামিক স্টেটের মিত্র সংগঠন ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) গত রবিবার গভীর রাতে এক মর্মান্তিক হামলা চালিয়েছে, যার ফলে অন্তত ৪০ জন কৃষক নিহত হয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বর্নো রাজ্যের তথ্য কমিশনার উসমান এক বিবৃতিতে জানান, আইএসডব্লিউএপি যোদ্ধারা ডুম্বা গ্রামে কৃষকদের একত্রিত করে নির্বিচারে গুলি চালায়। “প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রায় ৪০ জন কৃষক নিহত হয়েছেন, তবে অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন এবং যারা পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হয়েছেন, তাদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”

আইএসডব্লিউএপি ও বোকো হারাম দীর্ঘদিন ধরে চাদ হ্রদ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যা নাইজেরিয়া, নাইজার, ক্যামেরুন এবং চাদের সীমান্তবর্তী এলাকা। এই অঞ্চলটি তাদের নাশকতা চালানোর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্নো রাজ্যের ওই অঞ্চলে প্রায়ই সশস্ত্র হামলা ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

উসমান জানান, নিহত কৃষকরা সেনাবাহিনীর নির্ধারিত নিরাপদ এলাকার বাইরে গিয়ে কৃষিকাজ ও মাছ ধরায় ব্যস্ত ছিলেন, যেখানে এই দুই জঙ্গি সংগঠন সক্রিয়।

এএফপির হাতে আসা এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০০ জনেরও বেশি হতে পারে। আইএসডব্লিউএপি যোদ্ধাদের দায়ী করে এই হামলার জন্য তাদেরকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে।

বর্নো রাজ্য সরকার ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে, “ডুম্বা ও চাদ হ্রদের অন্যান্য এলাকাগুলোতে বিদ্রোহীদের খুঁজে বের করে নির্মূল করার জন্য কার্যক্রম চালানো হোক।” সরকার ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং নাইজেরিয়া সরকারের কাছে ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো যে, চাদ হ্রদ অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর এবং সেখানে সশস্ত্র সংঘর্ষের ফলে অসংখ্য নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা ছাড়া এই ধরনের হামলা বন্ধ করা কঠিন হবে।