জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল আসামিকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি সর্বসম্মতভাবে এই রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে বিচারিক আদালত এবং হাইকোর্টের রায়ও বাতিল করা হয়েছে।

এই রায়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার ১০ বছরের সাজা বাতিল হয়ে যায় এবং তার ছেলে তারেক রহমানসহ অন্য আসামিরাও সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন। আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, এবং আরও অনেক আইনজীবী। দুদকের পক্ষ থেকে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন এবং রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, তারা সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পেয়েছেন। আদালত রায়ে বলেন, "প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এই মামলা করা হয়েছিল।"

এতদিন পর এই রায়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান এবং অন্য আসামিরা একে অপরকে তোলার মাধ্যমে আইনের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তাদের আইনজীবীরা। ২০১৮ সালে এই মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিল বিচারিক আদালত, যার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন। পরে হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজা বাড়িয়ে দেয়।

গত বছরের ১১ নভেম্বর আপিল বিভাগের কাছে খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল মঞ্জুর হয় এবং ১০ বছরের সাজা স্থগিত করা হয়। এরপর এই মামলার শুনানি শুরু হয়, যা অবশেষে বুধবার রায় ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হলো।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং মামলার অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে সাজা দেওয়া হয়। এই মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, এবং জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান ছিলেন আসামি। তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ও মমিনুর রহমান পলাতক রয়েছেন।

এখন আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে এই মামলার সকল আসামি খালাস পেলেন, যা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য একটি বড় জয় হিসেবে দেখা যাচ্ছে।