ঢাকা, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১

মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিপিএল

ক্রিকেট ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জানুয়ারি ১৫ ২১:৪৭:৪১
মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিপিএল

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগ বিপিএল (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ) এবার চরম সংকটের মুখে। রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির আর্থিক অব্যবস্থাপনার কারণে পুরো টুর্নামেন্ট মাঝপথে বন্ধ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড়রা তাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক এবং দৈনিক ভাতা (ডে অ্যালাউন্স) না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ। এই অবস্থায় তারা খেলা চালিয়ে যেতে আর আগ্রহী নন।

রাজশাহী দলের মালিকপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। সূত্র জানিয়েছে, দলের মালিক বিদেশে অবস্থান করছেন এবং তার অনুপস্থিতিতে লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। মালিকের স্বাক্ষরিত চেকও বাউন্স করেছে, যা খেলোয়াড়দের জন্য আরও হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একজন দলের কর্মকর্তার ভাষায়, "টাকা না পাওয়ার কারণে খেলোয়াড়রা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তারা চায় টুর্নামেন্ট মাঝপথেই বন্ধ হোক।"

রাজশাহীর হয়ে খেলছেন জাতীয় দলের অন্যতম সেরা পেসার তাসকিন আহমেদ। তিনি এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকদের একজন এবং তার পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছে। তাসকিন গত বছর উইসডেনের সেরা একাদশেও জায়গা পেয়েছিলেন।

তবে, এমন সফল একজন ক্রিকেটারও তার পাওনা টাকা পাননি। শুধু তাই নয়, নিজের পকেটের টাকা খরচ করে খাবার খেতে হচ্ছে তাকে। তাসকিনের মতো আরও অনেক খেলোয়াড় একই পরিস্থিতির শিকার।

অন্যদিকে, বিদেশি খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে এই বৈষম্যের কারণে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

রাজশাহী দলে আনা হয়েছে এমন কিছু বিদেশি খেলোয়াড়, যারা অনেক দিন ধরেই পেশাদার ক্রিকেটের বাইরে। একজন খেলোয়াড়ের সর্বশেষ ম্যাচ ছিল পাঁচ বছর আগে।

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল এবং বিসিবির ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। তাদের প্রতি অভিযোগ উঠেছে, আর্থিকভাবে অযোগ্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার ফলে এই বিপর্যয় ঘটেছে।

ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, বিসিবি যদি দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তবে এই ঘটনা টুর্নামেন্টের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করবে এবং ক্রিকেটারদের প্রতি অবিচার হবে।

রাজশাহী দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। তারা অনুশীলন বন্ধ করে দিয়েছেন এবং ম্যাচ খেলতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। যদি এই অবস্থায় রাজশাহীর বাকি ম্যাচগুলো না হয়, তাহলে প্রতিপক্ষ দলগুলো ওয়াকওভার পেয়ে যাবে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে একটি পেশাদার টুর্নামেন্টে এমন অদ্ভুত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

বিপিএল-এর মতো বড় আসরে এমন ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য বড় লজ্জার। ভবিষ্যতে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আর্থিক সক্ষমতা যাচাই করে এবং কঠোর নিয়ম প্রয়োগ করে এমন পরিস্থিতি এড়ানো উচিত।

রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির এই অব্যবস্থাপনা শুধু খেলোয়াড়দের ক্ষতিগ্রস্ত করেনি, পুরো টুর্নামেন্টের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ক্রিকেটারদের শ্রম ও পারফরম্যান্সের প্রতি সম্মান জানানো অত্যন্ত জরুরি।

টুর্নামেন্টের সফল সমাপ্তি নিশ্চিত করতে বিসিবির দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। অন্যথায়, দেশের ক্রিকেটপ্রেমী জনগণের কাছে বিপিএল হারাবে তার গ্রহণযোগ্যতা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে