‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ এবং প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ করার প্রস্তাবকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এক বিবৃতিতে দলটি জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।

বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টি উল্লেখ করে, "সংস্কার কমিটির এই প্রস্তাব মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। বাংলাদেশের জনগণ একটি দীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে জাতীয় আত্মপরিচয় খুঁজে পেয়েছে।"

তারা আরও বলে, "মেহনতি শ্রমজীবী মানুষ মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়েছিল সমাজতন্ত্রের অভিপ্রায় নিয়েই। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই দেশের রাষ্ট্রদর্শনে কোনো রকম পরিবর্তন ঘটানো হলে তা জাতির আত্মপরিচয়কে অস্তিত্বহীন করে তুলবে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।"

ওয়ার্কার্স পার্টির মতে, একটি অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানের মৌলনীতি বদলানোর নৈতিক অধিকার রাখে না। বিবৃতিতে বলা হয়, "রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে কোনো সংস্কার প্রয়োজন হলে, তা একটি রাজনৈতিক নির্বাচিত সরকার কর্তৃক সব রাজনৈতিক পক্ষের অংশগ্রহণে হওয়া উচিত। এটাই সর্বোত্তম গণতান্ত্রিক পন্থা।"

ওয়ার্কার্স পার্টি উল্লেখ করে, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদর্শন জনগণের দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল। এ ধরনের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে দেশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা এই প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে এবং রাষ্ট্রের মৌলিক চেতনা রক্ষার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে সংবিধান সংস্কার কমিটির প্রস্তাবকে জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে বলে আখ্যা দিয়ে এই প্রস্তাব বাতিল করার দাবি জানানো হয়।