বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন জানিয়েছে, ২৭ জানুয়ারির মধ্যে তাদের দাবিগুলি না মানলে ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সংগঠনের দাবি, মাইলেজ ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক এবং নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রের বৈষম্যমূলক ১২ ও ১৩ নম্বর শর্ত বাতিল করা।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর বটতলী পুরাতন রেলস্টেশনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান। তিনি জানান, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা প্রায় ১৬০ বছর ধরে পার্ট অব পে হিসেবে রানিং অ্যালাউন্স পাচ্ছেন, কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের তৈরি জটিলতার কারণে তাদের সমস্যার সমাধান হয়নি।

মজিবুর রহমান বলেন, "২০০১ সাল থেকে রানিং স্টাফরা এই সমস্যার সমাধান চেয়ে আন্দোলন করে আসছেন। রাজনৈতিক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়েও ট্রেন সচল রাখতে তারা নিরলসভাবে কাজ করেন, কিন্তু তাদের সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসে কোনো বন্ধ নেই।"

এছাড়া, ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অর্থ মন্ত্রণালয় রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেয়। যদিও বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের পক্ষে, কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় এখনও বিষয়টির সমাধান করতে দেরি করছে।

এছাড়া, ২০২২ সালের পর নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়। নতুন কর্মীরা চলন্ত ট্রেনের দায়িত্ব পালনকারী হিসেবে রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না এবং তাদের মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না। পাশাপাশি, অবসরে যাওয়ার ক্ষেত্রে পেনশন ও আনুতোষিকের হিসাব করা হবে সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে, যা রেলওয়ের আইনে উল্লেখ নেই।

মজিবুর রহমান আরও বলেন, "বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে তিনবার সময় দেওয়া হয়েছে, তবে তারা স্থায়ী সমাধান চান। যদি অর্থ মন্ত্রণালয়ের পত্র এবং নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের বৈষম্যমূলক শর্ত প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে কর্মবিরতি পালন করা হবে।"

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল বারী, সহসভাপতি খুরশিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর এ বি এম শফিকুল আলম এবং অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।