ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

নতুন পাঠ্যবইয়ে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসে হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নাম বাদ দেওয়ায় বিতর্ক

২০২৫ জানুয়ারি ২৩ ১২:৩১:১২
নতুন পাঠ্যবইয়ে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসে হাসিনা ও আওয়ামী লীগের নাম বাদ দেওয়ায় বিতর্ক

নতুন পাঠ্যবইয়ে গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত ইতিহাসের অংশে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার নাম বাদ দেওয়ায় রাজনৈতিক এবং সামাজিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

২০২২ সালের জুলাই-অগাস্টে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে নতুন পাঠ্যবইয়ে কিছু নতুন তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা এক দফা দাবি পেশ করেছে এবং সারাদেশ থেকে মানুষ ঢাকায় ছুটছে’। তবে, বইয়ে আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করা হয়নি, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

পরিমার্জন কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, কিছু বইতে শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নাম রাখা হয়েছিল, তবে অন্যান্য বইতে তাদের নাম রাখার জন্য কোনো ‘ন্যায্য ব্যাখ্যা’ তারা পাননি। এ বিষয়ে কমিটির সদস্য সাজ্জাদুর রহমান বলেছেন, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে সবকিছু সঠিকভাবে করা সম্ভব হয়নি।

এছাড়া, সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইয়ের একটি কবিতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কবিতাটির ভাষাকে কিছু মানুষ মানসম্পন্ন না বলে উল্লেখ করেছেন, যা পাঠ্যবইয়ের সমালোচনার এক নতুন ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

নতুন বইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দের সঙ্গে সম্পর্কিত গ্রাফিতি নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ নামক সংগঠনটি এই গ্রাফিতির বিরোধিতা করে আন্দোলন করেছিল, যার ফলস্বরূপ এটি সংশোধন করা হয়। তবে আদিবাসী জনগণের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয় এবং একপর্যায়ে সংঘর্ষ ঘটে, যাতে কয়েকজন আহত হন।

বইয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে ‘সাবেক সেনাপ্রধান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা বিএনপির পক্ষ থেকে ভুল হিসেবে দাবি করা হয়েছিল। এনসিটিবি (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) এই বিষয়টি সংশোধন করেছে, তবে এ নিয়ে বিতর্ক থামেনি।

শিক্ষকরা বলেছেন, পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন আরও সতর্কতার সাথে করা উচিত ছিল, যাতে সঠিক এবং নিরপেক্ষ ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছায়। তারা মনে করেন, যদি পাঠ্যবইয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থাকে, তবে তা সমাজ ও দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেছেন, তারা কখনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বইগুলো পরিমার্জন করেননি। তিনি জানান, বিতর্কিত বিষয়গুলো সংশোধন করা হয়েছে এবং সঠিক ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য তারা সংঘর্ষ ও বিতর্ক এড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এই ঘটনা পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন প্রক্রিয়া এবং সংশোধনী কার্যক্রমের রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কের উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা শিক্ষাব্যবস্থায় আরও বেশি সতর্কতা ও নিরপেক্ষতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে