ঘরোয়া কাপ প্রতিযোগিতা কিংবা ইউরোপীয় মঞ্চে ধারাবাহিক বার্সেলোনা কিছুটা অনিয়মিত ছিল লা লিগায়। শেষ চার ম্যাচে জয় না পাওয়া বার্সেলোনা এবার দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ভ্যালেন্সিয়াকে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে শুধু জয়ের ধারায়ই ফেরেনি, রেকর্ডবুকেও নতুন কীর্তি গড়েছে হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।

প্রথমার্ধে গোল উৎসব

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক বার্সেলোনা প্রথম গোল পায় তৃতীয় মিনিটে। তরুণ প্রতিভা লামিনে ইয়ামালের ক্রস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোল করেন ডি ইয়ং। এরপর পঞ্চম মিনিটেই রাফিনিয়া পোস্টের খুব কাছ দিয়ে একটি শট মিস করেন। তবে অষ্টম মিনিটে আলেহান্দ্রো বালদের ক্রস থেকে সহজ গোল করেন ফেরান তোরেস, ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সেলোনা।

১৪তম মিনিটে তৃতীয় গোল আসে রাফিনিয়ার পা থেকে। ইয়ামালের দুর্দান্ত ব্যাকহিল পাসে ফারমিন লোপেজ বল বাড়ান রাফিনিয়ার দিকে, যিনি ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক মামার্দিশভিলিকে পরাস্ত করেন।

২৪তম মিনিটে চতুর্থ গোলটি করেন লোপেজ। পাউ কুবারাসির পাস থেকে গোল করলেও শুরুতে রেফারি অফসাইডের সংকেত দেন। ভিএআরের সাহায্যে গোলটি বৈধ ঘোষণা করেন তিনি। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে রাফিনিয়ার শট ক্রসবারে লেগে ফিরলে রিবাউন্ডে গোল করেন লোপেজ, যা বার্সাকে বিরতিতে নিয়ে যায় ৫-০ গোলে এগিয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধে রেকর্ডের পথে বার্সা

বিরতির পর খেলার ধারার বিপরীতে ৫৯তম মিনিটে ভ্যালেন্সিয়া একটি গোল শোধ করে। দিয়েগো লোপেজের ক্রস থেকে খুব কাছ থেকে গোল করেন দুরো। তবে বার্সেলোনার দাপট তাতে থামেনি।

৬৬তম মিনিটে রাফিনিয়ার বদলি হিসেবে নামা রবার্ট লেভানডফস্কি নিজের নাম লেখান স্কোরশিটে। ৭৫তম মিনিটে বার্সেলোনার সপ্তম গোলটি আসে ফেরান তোরেসের শট থেকে। যদিও গোলটি আত্মঘাতী হয়, ভ্যালেন্সিয়ার ডিফেন্ডার সেসার তারেগার ভুলে।

রেকর্ডের নতুন উচ্চতায় বার্সা

এই জয়ের মাধ্যমে হ্যান্সি ফ্লিকের অধীনে মাত্র ৩২ ম্যাচে গোলের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছে বার্সেলোনা। বার্সার ইতিহাসে এর চেয়ে কম ম্যাচে ১০০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন কেবল হেলেনিও হেরেরা। ১৯৫৯ সালে তার অধীনে বার্সেলোনা ৩১ ম্যাচে এই কীর্তি গড়েছিল।

বার্সেলোনার জন্য এটি চতুর্থবারের মতো কোনো মৌসুমে ৩২ ম্যাচ শেষে ১০০ বা তার বেশি গোলের রেকর্ড। ১৯৪২-৪৩ মৌসুমে ১০৬ গোল, ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে ১০৩ গোল এবং ২০১১-১২ মৌসুমে ১০২ গোল করেছিল তারা।

এই বিশাল জয়ের পর বার্সেলোনা লা লিগায় তাদের অবস্থান শক্তিশালী করল এবং আরও বড় কীর্তি গড়ার ইঙ্গিত দিল।