ঢাকা, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

বিদেশ গমনেচ্ছুদের সরকারের ১০ নির্দেশনা

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০২ ১৮:৫৪:৪৪
বিদেশ গমনেচ্ছুদের সরকারের ১০ নির্দেশনা

বাংলাদেশ সরকার বিদেশ গমনেচ্ছু নাগরিকদের জন্য ১০টি সতর্কতামূলক নির্দেশনা প্রকাশ করেছে, যাতে তারা বিদেশে কর্মসংস্থান করার পথে নিরাপদে চলতে পারে এবং প্রতারণা বা বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পায়। এই উদ্যোগটি বিশেষভাবে বিদেশ গমনের সময় বিপদগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কমানোর এবং বিদেশে পাঠানোর জন্য দালালচক্রের প্রতারণা থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানা গেছে, কিছু দালাল বাংলাদেশের নাগরিকদের রাশিয়ার যুদ্ধের মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পাঠিয়েছে। এতে অন্তত আটজন বাংলাদেশি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন এবং আরও ১৮ জন বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছেন। এমনকি কিছু মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে। এই ধরনের ঘটনা থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকার বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।

১০টি সতর্কতামূলক নির্দেশনা

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য যে ১০টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা মূলত বৈধ পন্থায় বিদেশে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে এবং দালালচক্রের প্রতারণা থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করবে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পয়েন্ট হল:

১. বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি: বিদেশ গমনের জন্য শুধুমাত্র বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া উচিত। দালাল বা অবৈধ সংস্থার মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত নয়।

২. ট্যুরিস্ট ভিসা দিয়ে কাজের প্রলোভন: দালালরা অনেক সময় ট্যুরিস্ট ভিসা বা ভিজিট ভিসা দিয়ে কাজের সুযোগের প্রলোভন দেয়। এসব প্রলোভনে পা দেওয়া উচিত নয়, কারণ তা আইনগতভাবে বৈধ নয়।

৩. নিয়োগকর্তার তথ্য যাচাই: বিদেশ যাওয়ার আগে নিয়োগকর্তার নাম, ঠিকানা, বেতন, কর্মের মেয়াদ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, আকামা বা ওয়ার্ক পারমিটসহ অন্যান্য সুবিধা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া উচিত।

৪. বহির্গমন ছাড়পত্র এবং টিকিট নিশ্চিত করা: বিদেশ গমনের পূর্বে বহির্গমন ছাড়পত্র এবং গন্তব্য দেশের টিকিট নিশ্চিত করা উচিত।

৫. জলপথ, স্থলপথ বা পায়ে হেঁটে বিদেশ যাওয়া থেকে বিরত থাকা: এসব মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার প্রচেষ্টা এক ধরনের প্রতারণা হতে পারে, সুতরাং এ ধরনের প্রলোভন থেকে দূরে থাকতে হবে।

৬. ভিসার সঠিকতা যাচাই করা: বিদেশ থেকে ভিসা পাওয়ার পূর্বে, গন্তব্য দেশের দূতাবাস বা সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে ভিসার সঠিকতা যাচাই করা উচিত।

৭. কর্মচুক্তি স্বাক্ষর: বিদেশ যাওয়ার পূর্বে নিয়োগকর্তার সঙ্গে সঠিক কর্মচুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে।

৮. ভিসা এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ: বিদেশ যাওয়ার পূর্বে ভিসা, কর্মচুক্তিপত্র, নিয়োগকারী এবং রিক্রুটিং এজেন্সির বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।

৯. বাংলাদেশ দূতাবাসের তথ্য সংরক্ষণ: বিদেশ গমনের পূর্বে গন্তব্য দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের ঠিকানা ও যোগাযোগ নাম্বার সংরক্ষণ করা উচিত।

১০. ভুয়া চাকরির বিজ্ঞপ্তি থেকে সাবধান: সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য মাধ্যমের মাধ্যমে প্রচারিত ভুয়া চাকরির বিজ্ঞপ্তি থেকে সাবধান থাকতে হবে। এসব বিজ্ঞপ্তি যাচাই করার জন্য সরকারী ওয়েবসাইট www.probashi.gov.bd অথবা www.bmet.gov.bd ব্যবহার করা উচিত।

সরকারের এই পদক্ষেপগুলি বিদেশ গমনেচ্ছুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদেরকে বৈধ পন্থায় কর্মসংস্থানের সুযোগ গ্রহণে সহায়তা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিদেশে কাজের সুযোগের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার আগে এসব সতর্কতামূলক নির্দেশনা অনুসরণ করা নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা বিপদগ্রস্ত না হন এবং প্রতারণার শিকার না হন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে