ঢাকা, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখার নিরাপদ উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১০ ১৭:০৮:৪২
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখার নিরাপদ উপায়

ডায়াবেটিস রোগীরা যদি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খাবারের সঙ্গে ওষুধ ও ইনসুলিনের সঠিক সমন্বয় করে রোজা রাখেন, তবে তারা নিরাপদে রোজা রাখতে পারবেন। রোজার প্রস্তুতি শুরু করার আগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে নফল রোজা রাখার মাধ্যমে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে।

এ বিষয়ে গত রবিবার রাজধানীর বনানীতে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের কার্যালয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এই বৈঠকটি আয়োজন করেছিল অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট ইন বাংলাদেশ (এসেডবি), এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের সহায়তায়।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। অনেক ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোজা রাখলে তারা হাইপোগ্লাইসেমিয়া (শর্করার স্বল্পতা), হাইপারগ্লাইসেমিয়া (শর্করার আধিক্য), ডায়াবেটিস কিটোএসিডোসিস এবং পানিশূন্যতার মতো জটিলতায় ভুগতে পারেন। তবে, ডায়াবেটিস রোগীরা যদি কিছু নিয়ম মেনে চলেন, তবে এসব জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

বিশেষভাবে ডায়াবেটিস রোগীদের সাহ্‌রি না খেয়ে রোজা রাখার ব্যাপারে সতর্কতা দেন চিকিৎসকেরা। যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের জন্য ইফতারের পর হালকা ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ইফতারে ১-২টি খেজুর খেয়ে কিছু সময় বিরতি দিয়ে ফল এবং সবজির স্যুপ খাওয়া উচিত। সাহ্‌রিতে বেশি পরিমাণে আমিষযুক্ত খাবার খেতে হবে এবং ইফতার থেকে সাহ্‌রি পর্যন্ত প্রচুর পানি পান করতে হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে রোজা রাখার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন পরিচালক (এনসিডিসি) মোহাম্মদ রোবেদ আমিন জানান, সরকার উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। টাইপ-১ ডায়াবেটিসের জন্য বিনা মূল্যে ইনসুলিন দেওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন বলেন, রমজানের আগেই নফল রোজা রেখে ডায়াবেটিস রোগীরা তাদের প্রস্তুতি নিতে পারেন। এতে তারা বুঝতে পারবেন রোজা রাখার সময় কোন ধরনের সমস্যা হতে পারে কি না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখার পূর্বে খাবার, ইনসুলিন এবং ওষুধের সঠিক সমন্বয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

এছাড়া, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের নির্বাহী পরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রান্তিক এলাকায় ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলিরও দায়িত্ব রয়েছে। এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস ২০১২ সাল থেকে বিশ্বমানের ইনসুলিন তৈরি করছে এবং এটি এখন ৩২টি দেশে রপ্তানি হবে।

বিভিন্ন হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের হেড অব মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ মুরাদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।

এ ধরনের আলোচনা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরা নিরাপদে রোজা রাখতে পারবেন এবং তাদের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে