ঢাকা, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য সামনে যেসব বড় বড় চ্যালেঞ্জ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২২ ১৭:২৩:৪৩
ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য সামনে যেসব বড় বড় চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে একটি নতুন ইস্যু নিয়ে আলোচনা চলছে, আর তা হলো ছাত্রদের নেতৃত্বে গঠিত হতে যাওয়া একটি নতুন রাজনৈতিক দল। দলটির নাম কী হবে, কে নেতৃত্বে আসবেন, তাদের আদর্শ কী হবে—এসব প্রশ্ন এখন সবার মুখে। এর আগে কোনো রাজনৈতিক দল গঠন হতে গেলে সাধারণত সৈন্য বা অভিজ্ঞ রাজনৈতিক নেতা চলে আসেন, কিন্তু এবার বিষয়টি ভিন্ন। দল প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই ছাত্রদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা, বিভক্তি এবং মূল আন্দোলনকারীদের মধ্যে কেউ কেউ নতুন দল থেকে বাদ পড়ার খবর আসছে। এসব আলোচনা অনেকের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে, তবে এর একটি ইতিবাচক দিকও রয়েছে—যে পরিমাণ আলোচনা হচ্ছে তা নতুন দল সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই নতুন দলের আদর্শ কী হবে? তারা কি দ্রুত ক্ষমতায় আসতে পারবে? দেশের তরুণ ছাত্ররা কি জনগণের বিশ্বাস অর্জন করতে পারবে? এবং সর্বোপরি, কী ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে পারে তারা?

এখানে, তুলনামূলকভাবে বিশ্বব্যাপী এমন উদাহরণগুলো দেখলেই বুঝতে পারি, নতুন দলগুলি কোথাও কোথাও কতটা সফল হতে পেরেছে। এখন, চলুন আলোচনা করি যে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্রদের নতুন দল কতটা কার্যকর হতে পারে এবং তাদের সামনে কী চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে।

প্রথমত, ছাত্রদের নতুন দল প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য তারা যে মূল রাজনৈতিক দলের অবস্থান নিয়ে আলোচনা করছে, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি, নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে, যেমন চাঁদাবাজি ইত্যাদি। তাছাড়া, বিএনপি বিরোধীরা ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে, ফলে তাদের শক্তি কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তবে নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে যদি ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোটার নতুন কোনো দলের দিকে ঝুঁকে যায়, তা হলে বিএনপি এবং তাদের বিদ্যমান অবস্থান নতুন কোনো দলের কাছে হারতে পারে।

তবে, ছাত্রদের দল আসলে জনগণের ভরসা অর্জন করতে সক্ষম হবে কি না, এটি বড় প্রশ্ন। কারণ দেশের অধিকাংশ মানুষ রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন নয় এবং পূর্বপুরুষদের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিয়ে থাকে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের তরুণ ভোটার সংখ্যা ব্যাপক এবং যদি তারা তাদের পরিবারের ভোটও নতুন দলে ব্যবহার করতে পারে, তবে এটি নতুন দলের জন্য বড় সুবিধা হতে পারে।

দ্বিতীয়ত, ছাত্রদের মধ্যে এমন একজন শক্তিশালী নেতা প্রয়োজন, যার নেতৃত্বে সারা দেশে একযোগিতার সৃষ্টি হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সফলতা দেখলে বোঝা যায় যে একজন শক্তিশালী, জনপ্রিয় নেতা দলের ভবিষ্যত গড়ে দিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে দিল্লির 'আম আদমী পার্টি' বা তুরস্কের 'এরদোয়ান' দলের উত্থান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এসব দল প্রতিষ্ঠার পর অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, কারণ তাদের নেতৃত্ব এবং আদর্শ মানুষ গ্রহণ করেছে।

তবে বাংলাদেশে ছাত্রদের মধ্যে এমন কোনো নেতা আছেন কি, যার দ্বারা পুরো দেশের মানুষ আকৃষ্ট হবে? তাদের মধ্যে কেউ যদি এই দায়িত্ব নিতে পারেন, তবেই দলটি সাফল্য অর্জন করতে পারে। আবার, ছাত্ররা আন্দোলন থেকে উঠে আসলেও মূলধারার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই, আর এ কারণেই তারা ক্ষমতায় আসার জন্য বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

এছাড়া, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন যে, নতুন কোনো দলের জন্য টিকে থাকা বা সফল হওয়া কঠিন হতে পারে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, যেসব পরিবারের পূর্বপুরুষরা কোন দলকে সমর্থন করেছেন, সেই দলগুলোকে ভোট দেওয়া হয়। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির অনিয়ম এবং জনমানুষের ক্ষোভের কারণে এখন জনগণের মাঝে নতুন কিছু দেখতে চাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। সুতরাং, যদি ছাত্রদের দল জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে, তবে তারা নিশ্চয়ই ক্ষমতায় আসতে সক্ষম হবে।

অবশেষে, এক্ষেত্রে বড় একটি চ্যালেঞ্জ থাকবে তা হলো—কীভাবে তারা দেশের পুরনো রাজনৈতিক কাঠামোকে অতিক্রম করবে এবং কীভাবে জনগণ নতুন দলের প্রতি আস্থা স্থাপন করবে। যদিও এটা একটি কঠিন কাজ, তবে ছাত্রদের উত্থান এবং নতুন দলের প্রতিষ্ঠা দেশের রাজনৈতিক পর landscape তে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

পরিশেষে, বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনটি জমজমাট হতে চলেছে, যেখানে ছাত্রদের দল কতটা সফল হতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সোহাগ আহমেদ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে