ঢাকা, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১

যে চাবিতে দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হবে বাংলাদেশ, ভারতের সব চেষ্টা এবার বৃথা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ ২১:০৯:১৪
যে চাবিতে দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হবে বাংলাদেশ, ভারতের সব চেষ্টা এবার বৃথা

বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে, যা তাকে দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এটি শুধু একটি সম্ভাবনা নয়, এটি বাস্তবায়িত করার জন্য বাংলাদেশ এখন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে।

বাংলাদেশের ভূ-অবস্থান আমাদের জন্য যে বিরাট সুযোগ তৈরি করেছে, তা পূর্ণাঙ্গভাবে কাজে লাগানোর এখনই সময়। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ তার ভূ-রাজনৈতিক সুবিধাগুলি পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি। প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন বাধার কারণে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই তার নিজস্ব ভৌগোলিক সুবিধা লাভ করতে পারেনি। তবে এখন সময় এসেছে এই অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর।

বিশ্বের প্রধান সমুদ্রপথের সঙ্গে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের অন্যতম বড় শক্তি। বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে বাংলাদেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রসীমা, যার আয়তন ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার। এই সমুদ্র পথ সরাসরি আন্তর্জাতিক শিপিং রুটের সঙ্গে যুক্ত, যা বিশ্ববাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ জলপথে হয়ে থাকে। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগর দিয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ মেরিটাইম ট্রেড পরিচালিত হয়। এটি বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল সুযোগ এনে দিতে পারে, যদি দেশের সমুদ্রপথটি কার্যকরীভাবে ব্যবহার করা যায়।

বিশ্বের ৪৪টি ভূবেষ্টিত দেশ, যাদের সমুদ্রবন্দর নেই, তারা বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে পারে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এই দেশগুলোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দর অত্যন্ত সুবিধাজনক। যদিও ভারতীয় শিলিগুড়ি করিডরের কারণে বাংলাদেশ তাদের এই সুবিধা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি, তবুও সময় এসেছে এই বাধাগুলি দূর করে এগিয়ে যাওয়ার।

এছাড়া, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও ভুটানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর হতে পারে। নেপাল এবং ভুটান কোন সমুদ্রবন্দর না থাকার কারণে ভারতের উপর নির্ভরশীল, তবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর তাদের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক। বাংলাদেশ শিলিগুড়ি করিডর সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে পারবে।

বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি বড় সুযোগ রয়েছে, যেখানে নেপাল এবং ভুটান তাদের হাইড্রো পাওয়ার রপ্তানি বাংলাদেশে করতে চাইছে। এই ক্ষেত্রেও শিলিগুড়ি করিডরের মাত্র ৩০ মাইল পথের অনুমতি দিলে, বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে।

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুস সম্প্রতি বাংলাদেশের ভূ-অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ যদি তার ভূ-অবস্থানের সুবিধাগুলি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে, তবে এটি অর্থনৈতিকভাবে পৃথিবীর দরজায় দাঁড়িয়ে থাকবে। তার মতে, এই সুযোগটি কাজে লাগালে বাংলাদেশকে আর কেউ আটকে রাখতে পারবে না।

বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। সিঙ্গাপুরের মতো দেশ যেভাবে সমুদ্রবন্দর থেকে তার জিডিপির একটি বড় অংশ আয় করছে, তেমনি বাংলাদেশও তার সমুদ্রপথ ব্যবহার করে বিশাল আয়ের পথ তৈরি করতে পারে। মালাক্কা প্রণালী, চীন, জাপান ও কোরিয়াগামী জাহাজগুলোতে জ্বালানি বিক্রি, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সেবা, এবং বন্দর সেবা প্রদান করেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।

এইসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে, বাংলাদেশ তার ভূ-অবস্থান থেকে বিশ্বে এক শক্তিশালী ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ এখন শুধু ভূ-অবস্থানে নয়, এই অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুত।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে