ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

রমজানে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ৪টি গুরুত্বপূর্ণ আমল

ধর্ম ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৩ ১২:২৬:৩৯
রমজানে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ৪টি গুরুত্বপূর্ণ আমল

রমজান হলো আমল ও ইবাদতের মাস, যা বছরের অন্য কোনো সময়ের তুলনায় বিশেষ। এই মাসে মুসলমানরা অধিক পরিমাণে ইবাদত এবং ভালো কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে চান। যারা সাধারণত অন্য মাসে নামাজ পড়েন না, তারা রমজান মাসে মসজিদে উপস্থিতি বৃদ্ধি করেন। রমজানের প্রথম দিকে মসজিদগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়, যদিও পরবর্তীতে কিছুটা কমে আসে। তবে এটি রমজান মাসের একটি ঐতিহ্য। নবীজী (সা.) ও তাঁর সাহাবি, পূর্ববর্তী ও বর্তমান আলেমরা রমজানে অধিক আমল করেন।

এখানে রমজানে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে যে চারটি আমল বেশি গুরুত্বের সাথে করা উচিত, তা তুলে ধরা হলো:

১. কোরআন তিলাওয়াত

রমজান হলো কোরআন নাজিলের মাস, আর কোরআন হলো আল্লাহর বাণী, যা মানবজাতির হেদায়েতের জন্য নাজিল করা হয়েছে। রমজান মাসে কোরআন তিলাওয়াত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (সা.) নিজেও রমজানে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করতেন। সাহাবিদেরও কোরআন তিলাওয়াতের জন্য উৎসাহিত করতেন। ফাতেমা (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, "প্রতি রমজানে রাসূল (সা.) জিবরাইল (আ.)-কে একবার কোরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন, তবে তাঁর মৃত্যুর বছরে তিনি তাকে দু'বার কোরআন শোনান।" (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬২৮৫)

২. দান ও সদকা

রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজানে দান ও সদকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সারা বছরই দান করা উচিত, রমজানে এর সওয়াব অনেক বেড়ে যায়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, "রাসূল (সা.) ছিলেন সবচেয়ে বেশি দানশীল। তিনি রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি দান করতেন, বিশেষত যখন জিবরাইল (আ.)-এর সাথে সাক্ষাৎ হতো। তখন তিনি এমন দানশীল হয়ে উঠতেন, যা বাতাসের থেকেও বেশি।" (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৮০৩)

৩. ইস্তেগফার পাঠ

ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ করার অন্যতম মাধ্যম। রমজানে ইস্তেগফার বেশি বেশি পড়া উচিত। মানুষের পক্ষে শয়তানের ধোঁকা, নফসের প্ররোচনা ও পরিবেশের কারণে অনেক সময় গুনাহে জড়িয়ে পড়া সম্ভব। এই গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার সেরা উপায় হলো ইস্তেগফার। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "আমি তাদেরকে বলেছি, ‘নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল।’" (সূরা নুহ, আয়াত : ১০)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, "রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তায়ালা তার সব সংকট থেকে মুক্তি দেন, তার সমস্ত পেরেশানি দূর করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।" (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৫১৮)

৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা

রমজান মাসে মুসলমানরা বেশি বেশি নেক আমল করে এবং আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করেন। রমজানে সবচেয়ে বড় প্রার্থনা হলো আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া। আমাদের দুনিয়াবী অনেক প্রয়োজন থাকতে পারে, কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করা। যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে, তার আর কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না। তাই রমজানে আল্লাহ তায়ালার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া উচিত।

রমজান মাসে অধিক আমল এবং দোয়া-দরুদ পাঠ করা আমাদের আত্মার পরিশুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন এবং এই পবিত্র মাসে তাঁর কাছে আমাদের দোয়া কবুল করুন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ