ঢাকা, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিন দলের দ্বন্দ্ব, ভিন্ন পথে ইসি

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৭ ১৪:৪২:০৮
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিন দলের দ্বন্দ্ব, ভিন্ন পথে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক শক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানোর পর, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এক অদ্ভুত ঐক্য গড়ে তুলেছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ঐক্য ভেঙে গিয়ে, এখন বিভিন্ন দল নিজেদের কৌশল এবং আদর্শের ভিত্তিতে আলাদা পথে চলছে। বর্তমানে, নির্বাচন নিয়ে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দল নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন দাবী তুলে ধরেছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।

বিএনপি শুরু থেকেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। দলটির নেতারা মনে করেন, জনগণের ম্যান্ডেট অর্জনের জন্য নির্বাচন অপরিহার্য এবং তাদের একমাত্র লক্ষ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন লাভ করা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "আর সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে, জনগণের চাহিদা পূরণের সময় এসে গেছে।" বিএনপি এ বিষয়ে এতটাই দৃঢ় যে, তারা আর কোনো দেরি দেখতে চায় না।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের অবস্থান থেকে জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচন একসঙ্গে আয়োজনের পক্ষে। এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা জাতীয় নির্বাচন পেছাতে চাইছে না, বরং একসঙ্গে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে, যদি সরকার যথাযথ প্রস্তুতি নেয়। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল আসলাম আদিব বলেন, "জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন একসঙ্গে হতে পারে, এতে নির্বাচন পেছানোর প্রয়োজন নেই। তবে সরকারের প্রস্তুতির উদ্যোগ জরুরি।"

তৃতীয় পক্ষ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী একেবারে আলাদা অবস্থান নিয়েছে। তাদের মতে, জাতীয় নির্বাচন হওয়ার আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন জরুরি। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, "স্থানীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত, কারণ সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধির অভাব রয়েছে, ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনগণ তাদের সমস্যার সমাধানে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে যেতে পারছে না।"

এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, স্থানীয় নির্বাচনের আগে যদি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে তা বাস্তবিকভাবে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে। নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, "স্থানীয় নির্বাচনের জন্য অন্তত এক বছরের প্রস্তুতি প্রয়োজন, কারণ এটি ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। তবে আমাদের লক্ষ্য ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করা।"

ইসি আরও জানিয়েছে, সরকার থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয় নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি, তবে তারা জুনের মধ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুতসহ অন্যান্য প্রস্তুতি শেষ করার পরিকল্পনা করছে।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন চলছে চরম উত্তেজনা। বিএনপি, এনসিপি এবং জামায়াত—এই তিনটি দল নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান জোরালোভাবে তুলে ধরছে। একদিকে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ এবং তর্ক-বিতর্ক রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করছে। এখন সবার নজর নির্বাচন কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং সরকারের পরিকল্পনায়।

অতএব, বাংলাদেশে নির্বাচনের সময়, পদ্ধতি এবং কার্যক্রম নিয়ে চলমান রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নিঃসন্দেহে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে এক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। সকলের চোখ এখন এই ঘটনাপ্রবাহের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত