ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১

ভারতীয় সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা, বাংলাদেশকে সাবধান করে বললেন

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৯ ১৪:২৬:৩৯
ভারতীয় সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা, বাংলাদেশকে সাবধান করে বললেন

ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের সামরিক সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী এবং দুই দেশের সেনাবাহিনী নিয়মিতভাবে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে।

শনিবার (৮ মার্চ) ভারতের সংবাদমাধ্যম *ইন্ডিয়া টুডে* আয়োজিত 'ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ' অনুষ্ঠানে তিনি এই তথ্য জানান।

এ সময় তিনি চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, "এই দুই দেশের মধ্যে গভীর সহযোগিতা রয়েছে, যা আমাদের বাস্তবতা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল দ্বিমুখী হুমকির পরিস্থিতি।"

ভারতীয় সেনাপ্রধান ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভবিষ্যত প্রস্তুতি, চলমান সংঘাত থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশ পরিস্থিতি, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) এবং নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, "যেহেতু আমি পশ্চিম প্রতিবেশী এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছি, এটা স্পষ্ট যে, আমরা ওই সম্পর্ককে গুরুত্ব সহকারে দেখি।"

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "আমার মতে, সন্ত্রাসবাদের উৎস যদি একটি নির্দিষ্ট দেশ হয় এবং সেই দেশ যদি আমার প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ-এর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে, তাহলে এটি আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয় হতে পারে, কারণ সন্ত্রাসী কার্যক্রম ওই দেশ থেকে পরিচালিত হতে পারে।"

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, "ঢাকায় সরকারের পরিবর্তন হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে, তবে এখনই এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া খুব তাড়াতাড়ি হবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমি স্পষ্টভাবে বলি, বর্তমানে আমাদের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। আমরা নিয়মিত তথ্য আদান-প্রদান করি, যাতে কোনো ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ না থাকে।"

ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান ও চীন সম্পর্ক কিভাবে দেখে, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "দুই দেশের মধ্যে উচ্চমাত্রার সহযোগিতা রয়েছে, যা আমাদের মেনে নিতে হবে। ভার্চুয়াল ক্ষেত্রে এটি প্রায় শতভাগ এবং পাকিস্তানের বেশিরভাগ সামরিক সরঞ্জাম চীনের তৈরি। এই পরিস্থিতি আমাদের সামনে বিদ্যমান। এর মানে হচ্ছে, দ্বিমুখী হুমকির বাস্তবতা।"

তিনি আরও বলেন, "ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে নিহত সন্ত্রাসীদের ৬০ শতাংশ পাকিস্তানের নাগরিক। উপত্যকা ও পীর পাঞ্জালের দক্ষিণে বেঁচে থাকা সন্ত্রাসীদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ পাকিস্তানি। আমরা আমাদের পশ্চিমা শত্রুদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শিথিলতা দেখাই না।"

তবে তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে এবং পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রবিন্দু’ থেকে একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আমি সবসময় বলি, আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকব। আমরা দৃঢ় থাকব, তবে আক্রমণাত্মক হব কেবল তখনই, যখন আমাদের বাধ্য করা হবে।"

এর আগে, ১৩ জানুয়ারি ভারতের সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেছিলেন, "বাংলাদেশের খুব ছোট একটি অংশ ছাড়া পুরো সীমান্তই ভারতীয় ভূখণ্ডে অবস্থিত। আমাদের সম্পর্কের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়া উচিত নয়।"

এভাবে, তিনি একটি সতর্ক বার্তা দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শক্তি ও প্রতিবেশীদের প্রতি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ