ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের আর কোনো উপায় নেই

২০২৫ মার্চ ০৯ ২৩:২১:৩৮
বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের আর কোনো উপায় নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক; ভারত বরাবরই বাংলাদেশকে তার প্রভাবাধীন অঞ্চলের অংশ মনে করত, কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর সেই ধারণা কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। বাংলাদেশ নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে নানা বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে, এবং ভারত এই পরিবর্তনটি বুঝতে পেরেছে।

ভারত নিজের দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রতিরোধ করতে না পারলেও, বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে তারা বরাবরই চিন্তিত ছিল। একসময়, বাংলাদেশকে তারা তাদের "সোনার ডিম পাড়া হাঁস" হিসেবে দেখত, কিন্তু সেই হাঁস যখন হারিয়ে যায়, তখন ভারতের অবস্থান কিছুটা অস্থির হয়ে পড়ে। ভারতের মনে হতে থাকে, বাংলাদেশ যেন তাদের অঙ্গরাজ্য, কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ।

ভারতীয় মিডিয়া প্রায়ই বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যাচার করত, যা বাংলাদেশের জনগণ ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। রাজনৈতিক চাপ কমে যাওয়ায়, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার প্রবণতা কমে গেছে। ভারতে চিকিৎসা বা কেনাকাটা না পেয়ে বাংলাদেশে উৎসব বন্ধ হয়ে যাবে—এমন আশঙ্কা ছিল, কিন্তু বাস্তবে সেসব কিছুই ঘটেনি। বরং, বাংলাদেশ তার নিজস্ব শিল্প খাতে উন্নতি করেছে এবং দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হয়েছে।

ভারতীয় সীমান্তে ভিসা বন্ধ থাকায় কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের হোটেল এবং বাজারগুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছে। অর্থনীতির এই মন্দার মধ্যে, বাংলাদেশের অভ্যুত্থানও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে। ৫ আগস্টের পর, মিয়ানমারের সাথে চীনের কৌশল পাল্টে যাওয়ার মতো পরিবর্তন এসেছে, যা এশিয়ার অন্যান্য দেশের কূটনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে।

ভারতের ভিতরে বর্তমানে জাতিগত সহিংসতা এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের অশনিসংকেত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ ও মণিপুরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে, এবং মিজোরামে জাতিগত আন্দোলন চলছে। দেশটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও জাতিগত দ্বন্দ্বে ভুগছে, অন্যদিকে, বাংলাদেশ তার অবস্থান শক্ত করেছে।

এই পরিস্থিতিতে, ভারতের সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার কথা বলছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ভারত সবসময় তার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, এবং বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ।” তিনি আরও বলেছেন, "আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চেষ্টা করি, কারণ অটল বিহারী বাজপেয়ী বলতেন, 'আমরা আমাদের বন্ধুদের পরিবর্তন করতে পারি, কিন্তু প্রতিবেশীদের নয়।'"

তবে, ভারত সরকার হাসিনা সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির কথা বললেও, বাংলাদেশের জনগণ ও রাজনৈতিক পরিবেশে পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশের জনগণ এখন আর অতীতে ফিরে যেতে চায় না, এবং ভারত যদি তার পুরনো চিন্তা-ধারণায় ফিরে যায়, তবে বাংলাদেশে ভারত বিরোধী মনোভাব বাড়তে পারে।

এখন, ভারতকে বুঝতে হবে, সঠিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতা সম্মান করতে হবে।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ