নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজধানীতে মানুষের শান্তিপূর্ণ চলাচল এখন কঠিন হয়ে পড়েছে, যেখানে বর্তমানে সরকারি পরিস্থিতি এমন যে, ঢাকার বাসিন্দারা রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারছেন না। বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে একের পর এক দাবি আদায় এবং আন্দোলন শুরু হয়েছে, যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কিছু সমস্যার সমাধান হওয়ার আগেই নতুন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, আর এই সব আন্দোলন একে একে চলতে থাকায় জনগণের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে, অপরাধের হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি তৈরি করার পেছনে রয়েছে পরাজিত রাজনৈতিক শক্তির ষড়যন্ত্র। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, আওয়ামী লীগের কিছু সহযোগী সদস্য দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একাধিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ দলীয় হাজারো নেতা-কর্মী ভারত পালিয়ে গেছেন এবং বেশিরভাগ কলকাতায় অবস্থান করছেন। সেখানে তারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে নানা ধরনের পরিকল্পনা করছে। এসব ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা ফেসবুক, মেসেঞ্জার, টেলিগ্রাম, এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সরাসরি এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া, আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে হরতাল, মশাল মিছিল এবং লিফলেট বিতরণের মতো কর্মসূচি প্রকাশ করা হচ্ছে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ কর্মকর্তারাও এসব কার্যক্রমে জড়িত বলে জানা গেছে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে এসব ঘটনাগুলোর বিষয়ে জানা গেছে। দেশের স্বার্থ রক্ষার কথা চিন্তা করে কখনো রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য ক্ষমতায় আসার চেষ্টা সফল হয়নি।

ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাত মাস পূর্ণ হতে চলেছে, আর ঈদের আগে গার্মেন্ট সেক্টরে বিশাল অস্থিরতা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র চলছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে, যাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পতনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি অডিও বার্তায় এসব পরিকল্পনার কথা ফাঁস হয়েছে। এর পরপরই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা ঘোষণা করেছেন এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা এসব শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

এছাড়া, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে নতুন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর পুলিশ সদস্যরা বিদ্রোহ শুরু করেছিল, যা পরে আনসার সদস্যদের বিদ্রোহে রূপ নেয়। এদের উদ্দেশ্য ছিল নতুন সরকারকে বিপদে ফেলতে এবং সচিবালয় ঘেরাও করতে।

এভাবে একে একে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন শুরু হয় এবং রাস্তা অবরোধ করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ছয় মাসে দেশব্যাপী প্রায় ২০০টি আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সরকার বারবার জানিয়েছে, এসব আন্দোলনের সঙ্গে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জড়িত।

রনি/