ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

রাঙ্গামাটিতে দাদার লালসার শিকার হল ৩ বছরের শিশু

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ১২ ১০:৫২:০৪
রাঙ্গামাটিতে দাদার লালসার শিকার হল ৩ বছরের শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদি মোনতলা গ্রামে তিন বছরের এক শিশু তার দাদার লালসার শিকার হয়েছে। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি সোমবার (৯ মার্চ) ঘটে, যা পরদিন মঙ্গলবার পুলিশের নজরে আসে। রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনার বিষয়ে অবগত এবং অভিযুক্তকে ধরতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

শিশুটিকে বর্তমানে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শওকত আকবর খান জানান, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশুটির শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছে।

ভুক্তভোগী শিশুর মা জানান, রবিবার রাতে তার মেয়ে দাদা-দাদির সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল। পরদিন সকাল ৭টার দিকে শিশুটি হঠাৎ চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। শব্দ শুনে মা ছুটে গিয়ে দেখেন, তার মেয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। শিশুটি তখন দাদার নির্যাতনের কথা জানায়।

মা আরও জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে তার শ্বশুর তার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। দুপুরের দিকে মেয়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে—অতিরিক্ত কান্না, শরীরে জ্বর এবং ব্যথার অভিযোগ করতে থাকে। পরে রাত ১০টার দিকে তাকে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৬০ বছর বয়সী সুভাষ কুমার চাকমা ওরফে জাগুলুক্কে ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরতে তৎপর রয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের প্রোগ্রাম অফিসার মো. এমদাদ উল্লাহ জানিয়েছেন, ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে এবং শিশুটির প্রয়োজনীয় মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মতি পাওয়া মাত্রই মামলা দায়ের করা হবে।

রাঙ্গামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি মো. সাহেদ উদ্দিন বলেন, "আমরা ঘটনার বিষয়ে অবগত আছি। অভিযুক্তকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের মুখোমুখি করতে।"

এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সমাজের সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসনকে আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিশুর পাশে দাঁড়িয়ে তাকে মানসিক ও শারীরিক সহায়তা দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে।

এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হলে সমাজে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে বলে আশা করা যায়।

রনি/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ