ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

মাগুরার আট বছরের সেই শিশুর অবস্থা সংকটাপন্ন, ফের অবনতি

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ১২ ১১:৩০:৩৫
মাগুরার আট বছরের সেই শিশুর অবস্থা সংকটাপন্ন, ফের অবনতি

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটির শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে শিশুটির পরিবারের সদস্য ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

শিশুটির মামাতো ভাই জানান, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা ভালো নেই। "গতকাল কিছুটা উন্নতি হয়েছিল, কিন্তু আজ আবার অবস্থা খারাপের দিকে গেছে," বলেন তিনি।

মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক জানান, সোমবার (১০ মার্চ) শিশুটির সামান্য উন্নতি হয়েছিল, তবে আজ (১১ মার্চ) তার মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, "ধর্ষণের পর শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল, যার ফলে দীর্ঘক্ষণ তার মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। হাসপাতালে আনার আগ পর্যন্ত প্রায় ১১ ঘণ্টা সে অক্সিজেন সংকটে ছিল, যা তার মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি করেছে।"

চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির গ্লাসগো কোমা স্কেল (GCS) আবার ৩-এ নেমে এসেছে, যা সম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থা নির্দেশ করে। অথচ স্বাভাবিক মাত্রা ১৫ হওয়া উচিত। গতকাল তার জিসিএস ৫ পর্যন্ত উন্নীত হয়েছিল, কিন্তু আজ পুনরায় তা অবনতি হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে ভয়ংকর নির্যাতনের শিকার হয় শিশুটি। ধর্ষণের পর তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করা হয়।

গুরুতর অবস্থায় প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পিআইসিইউতে (শিশু নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট) নেওয়া হয়।

সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতেই শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়, যেখানে শিশুটির চিকিৎসার জন্য আট সদস্যের বিশেষজ্ঞ বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

শিশুটির মা শনিবার (৮ মার্চ) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় ভুক্তভোগীর বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার (৯ মার্চ) মধ্যরাতে মাগুরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মতিন আসামিদের রিমান্ড আবেদনের শুনানি করেন।

প্রধান অভিযুক্ত, শিশুটির বোনের শ্বশুরকে ৭ দিনের রিমান্ড

বোনের স্বামী, শাশুড়ি ও ভাশুরকে ৫ দিনের রিমান্ড

শিশুটির পরিবার, স্থানীয়রা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।

এমন জঘন্য অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো কঠিন হবে। শিশুটির সুস্থতা কামনায় সারা দেশ থেকে প্রার্থনা করা হচ্ছে, আর অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছে সাধারণ মানুষ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ