ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

আসামি বিদেশে নিষেধাজ্ঞা কিভাবে হল দেশে

২০২৫ মার্চ ১২ ১৩:১৬:৫৩
আসামি বিদেশে নিষেধাজ্ঞা কিভাবে হল দেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পর, ভারত পালিয়ে যান পতিত আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরেই দলের অনেক নেতাকর্মী, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যসহ আরও অনেকেই একই পথে হাঁটেন এবং অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি।

দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্রমাগতভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। আদালত, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), সিআইডি, এবং পুলিশও এসব নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য আদালতে নিয়মিত আবেদন করছে। আদালত এসব আবেদন গ্রহণ করে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করছে।

কিন্তু, আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা অনেক সময় যাচাই-বাছাই ছাড়াই হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। অনেক ক্ষেত্রে, যখন আসামি বিদেশে থাকে, তখনও আদালত তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাকে। তবে, সরকারি কোন সংস্থা আদালতে আসামির দেশের বাইরে থাকার প্রমাণ সরবরাহ করতে পারে না, এবং এটি নিশ্চিত করাও সম্ভব হয় না।

শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর, তার সরকারের সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে দুদক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে থাকে। সরকারের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয় এবং ১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে চার্জশিটও প্রদান করা হয়।

১১ মার্চ দুদক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানার বিরুদ্ধে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ জাকির হোসেন গালিব নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

এছাড়া, লন্ডনে থাকা ব্রিটিশ এমপি এবং শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে ভারতে থাকা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, আমেরিকায় থাকা হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, এবং রেহানা পুত্র রাদুয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এমন অন্তত ১০০ জন ব্যক্তি বিদেশে চলে গেছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের কৌতুকও সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, বিদেশে থাকা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদক নিষেধাজ্ঞা চাইলেই, যাচাই-বাছাই ছাড়াই আদালত তা মঞ্জুর করে দিচ্ছে, যেন এটি একটি প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ