সদ্য সংবাদ
মোদির বানান স্ক্রিপ্টেই চলে ভারতীয় মিডিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার রাত তখন গভীর, বাতাসে বসন্তের মৃদু শীতলতা, কিন্তু রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে। দেশের একাংশের দৃষ্টি তখন ভারতীয় মিডিয়ার দিকে, যেখানে প্রতিদিন নতুন নাটকীয় স্ক্রিপ্ট তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশকে নিয়ে। কখনো বলা হচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশে সামরিক অভিযান চালাতে যাচ্ছে, কখনো জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা ঢাকায় আসবে, আবার কখনো বলা হচ্ছে প্রফেসর ইউনুস দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।
কিন্তু এবার ভারতীয় মিডিয়ার গুজব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের গল্প সাজিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছে কিছু ভারতীয় প্রচারমাধ্যম। ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী অর্থনৈতিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে এবং একটি অভ্যুত্থান হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এই ভুয়া খবর মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে, বিশেষ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। কিছু টেলিভিশন চ্যানেল এটিকে আরও অতিরঞ্জিত করে প্রচার করতে থাকে, যেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কঠোর বিবৃতি দিয়ে এই গুজবের প্রতিবাদ জানায়। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সুসংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ, সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে তারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই ধরনের ভুয়া সংবাদ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রচারণার পেছনে সুস্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। ভারতীয় মিডিয়া শুধুমাত্র মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায় না, এটি একটি রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদিত প্রোপাগান্ডার অংশও হতে পারে।
তাদের মতে, এই প্রচারণার চারটি কৌশলগত কারণ রয়েছে:
১. বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা: আন্তর্জাতিক মহলে সেনাবাহিনীকে বিভক্ত ও দুর্বল দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে বাংলাদেশের ওপর বৈশ্বিক আস্থা কমে যায়। ২. রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা: বারবার মিথ্যা সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। ৩. বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা: বাংলাদেশ বর্তমানে আন্তর্জাতিকভাবে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, চীন ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত হচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়া এই সম্পর্কগুলো নষ্ট করতে চাইছে। ৪. ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির স্বার্থ: বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশকে ইস্যু বানাতে চায়, কারণ সংখ্যালঘু ও অভিবাসন ইস্যুগুলো ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে ব্যবহৃত হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, ভারতীয় মিডিয়া এখন কল্পকাহিনীর এক ফ্যাক্টরিতে পরিণত হয়েছে। সংবাদ পরিবেশনের জায়গায় ঢুকে পড়েছে অতিরঞ্জিত নাটকীয়তা। হিন্দি সিরিয়ালের মতো প্রতি সপ্তাহে নতুন টুইস্ট আনছে তারা—আজ সেনা অভ্যুত্থানের গল্প, কাল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর আসার গুজব, পরশু ভারতীয় সামরিক হস্তক্ষেপের কল্পকাহিনী!
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এই গুজব ছড়ানোর প্রবণতা নতুন কিছু নয়। বিতর্কিত ভারতীয় সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী একবার স্বীকার করেছিলেন যে, ভারতীয় দর্শক চিৎকার ছাড়া সংবাদ শুনতে চায় না। ফলে ভারতীয় মিডিয়ার সংবাদ উপস্থাপনের ধরণ সিরিয়ালাইজড হয়ে গেছে—একটি কল্পকাহিনী শেষ না হতেই আরেকটি শুরু হয়ে যায়।
তবে বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের জনগণ এখন আর ভারতীয় হিন্দি সিরিয়ালের মতো মিডিয়ার নাটকীয় গুজব গ্রহণ করছে না। বরং এসব গুজব এখন হাস্যরসের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার কূটনৈতিক মহলে আজকাল একটাই আলোচনার বিষয়—ভারতীয় মিডিয়ার লাগামহীন কল্পকাহিনী। এক প্রবীণ সাংবাদিক মজা করে বললেন, "এভাবে চলতে থাকলে ভারতীয় সাংবাদিকদের বলিউডে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত, অন্তত সিনেমার সংলাপ লিখে কিছু উপকারে আসবে!" পাশে বসা এক তরুণ সাংবাদিক মুচকি হেসে যোগ করলেন, "আর যারা গোপন সূত্র দিয়ে বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের খবর দেয়, তাদের জন্য ওটিটিতে স্পাই থ্রিলার বানানো যেতে পারে।"
ঢাকার আকাশ তখন রাতের গভীরতায় নিমজ্জিত, কৃষ্ণচূড়ার পাতা নড়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে চাপা হাসির গুঞ্জন। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ব্যঙ্গ—পরের পর্বে কি হবে? সেনাপ্রধান কি টাইম ট্রাভেল করে অতীতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করবেন? না কি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা আসার আগেই ভারতীয় মিডিয়া দাবি করবে ঢাকায় ভিনগ্রহের প্রাণীরা অবতরণ করেছে?
এই কল্পকাহিনী কতদিন চলবে, তা কেউ জানে না। তবে এক বিষয় পরিষ্কার—বাংলাদেশের জনগণ আর গুজবে কান দেয় না, বরং মজা নেয়!
সোহাগ/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- মাগুরার আছিয়ার বোনের মুখ থেকে সত্যিটা শোনেন (ভিডিওসহ)
- আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে(ভিডিওসহ)
- মাগুরায় ৮ বছরের শিশুর ডিএনএ রিপোর্টে নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য
- পাওয়া গেল; আছিয়ার ধ/র্ষণ ও হত্যা মামলার এজাহারে ভয়াবহ লোমহর্ষক বর্ণনা
- সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি: সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন হার
- আছিয়ার মৃত্যুর পর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন আছিয়ার মা (ভিডিওসহ)
- আছিয়ার ধ/র্ষণ ও হত্যা মামলার এজাহারে ভয়াবহ লোমহর্ষক বর্ণনা
- মাগুরায় আলোচিত ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শুনানি হল গভীর রাতে রায় নিয়ে যা জানা গেল
- ব্রেকিং নিউজ: সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিশাল বড় সুখবর
- শাশুড়ি আমার খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিল
- আছিয়ার ঘটনায় শিক্ষক মাহফুজের চাঞ্চল্যকর তথ্য
- মাগুরায় শিশু ধ"র্ষণ হইছে যে ঘরে (ভিডিওসহ)
- আছিয়ার সঙ্গে কি হয়েছিলো সেই রাতে, জানালেন মা
- সাহরি খাওয়ার পরে কি সহবাস করা যাবে
- তিনজন ধ/র্ষণ করলো আছিয়ার বোনের ঘুম ভাঙেনি কেন