নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিশেষত, এই সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান বিষয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা নিয়ে নানা ধারণা তৈরি হচ্ছে। গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশের ওপর রোহিঙ্গাদের চাপ ক্রমশ বাড়ছে, এবং এই সংকটের সমাধান নিয়ে অন্ধকারে রয়েছে অনেক কিছু। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আরাকান স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গারা তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।

এই সংকট সমাধানে নোবেলজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুস কি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন? আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আসলে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এবং সেই অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সাহায্য এবং সমাধানের পথ খুঁজতে বাংলাদেশ সফর করছেন। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএইড রোহিঙ্গাদের সহায়তার অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের দুর্দশা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

ড. মোহাম্মদ ইউনুস, যিনি আন্তর্জাতিক মহলে বেশ মর্যাদাপূর্ণ এবং শক্তিশালী সম্পর্কের অধিকারী, তার এই সফরে একটি ভূমিকা থাকতে পারে বলে অনেকের ধারণা। অধ্যাপক মোস্তফা সরোয়ার এবং ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এই মতের সঙ্গে একমত। তাদের মতে, ইউনুসের আন্তর্জাতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গাদের সংকট সমাধানে কিছু অগ্রগতি আনা সম্ভব।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, বর্তমানে পৃথিবী একটি মাল্টিপোলার বিশ্ব ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশ এবং রোহিঙ্গাদের জন্য একটি বড় সুযোগ হয়ে উঠতে পারে। তবে, জাতিসংঘের মহাসচিবের এই সফর কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে। রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ মন্তব্য করেন, "এটি নতুন কিছু নয়, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার সময়ও গুতেরেস বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।" তার মতে, এটি কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এর আউটপুট নিয়ে আশাবাদী হওয়া কঠিন।

তবে, সরকারের জন্য এটি কিছুটা সাফল্য হতে পারে, কারণ অন্তত জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সফর করছেন। এই সফর সিম্বোলিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে, রোহিঙ্গা সংকটের প্রকৃত সমাধান এখনও অনেক দূরে। চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশকে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে, যা জাতির জন্য অত্যন্ত জরুরি।

এদিকে, অনেকেই মনে করছেন যে এই সফর থেকে বিশেষ কোনো ফল পাওয়া নাও যেতে পারে, তবে দেশের সংকট মোকাবিলায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ এখনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সোহাগ/