সদ্য সংবাদ
চন্দ্র ও সূর্যের গ্রহণ সম্পর্কে ইসলাম ও বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিদিন পূব আকাশে সূর্য ওঠে, সারাদিন রোদের তাপ বিলিয়ে আবার পশ্চিম আকাশে ডুবে যায়। এরপর আসে রাত, এবং আকাশে উঠে চাঁদ, তার স্নিগ্ধ আলো দিয়ে পরিবেশকে আলোকিত করে। মহান আল্লাহ বলেন, "তিনি তোমাদের কল্যাণের জন্য সূর্য ও চাঁদকে এক নির্দিষ্ট নিয়মে চলতে দিয়েছেন এবং রাত ও দিনকে তোমাদের উপকারে নিয়োজিত করেছেন।"
তবে এই পরিচিত সূর্য ও চাঁদের দৃশ্যের মাঝে কখনো কখনো অদ্ভুত কিছু ঘটে। মাঝে মাঝে দেখা যায়, সূর্য বা চাঁদ আংশিক বা পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যায়। এই ঘটনা আমরা চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ নামে চিনি। এই সময়, অনেক মানুষ নানা কুসংস্কারে বিশ্বাস করে, কিছু বিধিনিষেধ পালন করে, আবার কেউ কেউ আনন্দ-উৎসবও আয়োজন করে। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, কেন সূর্য ও চন্দ্রের গ্রহণ হয়? ইসলাম এবং বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা কী?
যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে, তখন কিছু সময়ের জন্য সূর্য আংশিক বা পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যায়, এটিই সূর্যগ্রহণ (solar eclipse)। আর যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবী থেকে কিছু সময়ের জন্য চাঁদ অদৃশ্য হয়ে যায়, এটিই চন্দ্রগ্রহণ (lunar eclipse)। সূর্যগ্রহণ সাধারণত অমাবস্যার রাতে এবং চন্দ্রগ্রহণ পূর্ণিমার রাতে ঘটে। তবে, প্রতি অমাবস্যা বা পূর্ণিমায় সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না, কারণ সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদের কক্ষপথ এক সমতলে অবস্থান করে না; তাদের কক্ষপথে একটি কৌণিক ব্যবধান রয়েছে। এর ফলে প্রতিবছর সাধারণত দুটি চন্দ্রগ্রহণ এবং দুই থেকে পাঁচটি সূর্যগ্রহণ ঘটে।
বিশ্ববাসী ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর একটি বিরল সূর্যগ্রহণের দৃশ্য দেখেছিল, যখন চাঁদ সূর্যের ৯০ শতাংশের বেশি ঢেকে ফেলেছিল। এই সময় সূর্যের চারপাশে "রিং অফ ফায়ার" বা আগুনের বলয় দেখা যায়। সূর্যগ্রহণের সময় প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে—পাখিরা ফিরে যেতে থাকে, বাতাস স্থির হয়ে যায়, এবং তাপমাত্রা কমে যায়।
চন্দ্র ও সূর্য আল্লাহর সৃষ্টির নিদর্শন। ইসলাম অনুযায়ী, অনেক পুরনো সময়ে এবং এখনো কিছু মানুষ চন্দ্র ও সূর্যকে পূজা করে, তবে ইসলাম বলে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছু উপাসনার যোগ্য নয়। সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সতর্কবাণী হিসেবে আসে। আল্লাহ বলেন, "তোমরা সূর্যকে সেজদা করো না, চন্দ্রকেও সেজদা করো না, বরং তাদের স্রষ্টা আল্লাহকে সেজদা করো।"
অনেক মানুষ বিশ্বাস করে যে, সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় কিছু অশুভ ঘটনা ঘটলে তা পৃথিবীতে বড় কোনো ঘটনার পূর্বাভাস। কিন্তু ইসলাম এই ধারণাকে ভ্রান্ত মনে করে। সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের সময় ইসলামের পরামর্শ হলো আল্লাহর জিকির, তাসবিহ, নামাজ এবং দোয়া করা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সূর্যগ্রহণের সময় সাহাবিদের সাথে নামাজ আদায় করেছিলেন। সূর্যগ্রহণ হলে তিনি সাহাবীদের নিয়ে নামাজ পড়তেন এবং দোয়া করতেন, এবং বলতেন, "যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে, তখন নামাজ পড়ো এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করো।"
তিনি আরও বলেছিলেন, সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর অগণিত নিদর্শনের মধ্যে দুটি নিদর্শন। এগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের সতর্ক করতে চান যে, কেয়ামতের আগেও সূর্য ও চাঁদের আলো নিভে যাবে।
চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ আমাদের জন্য আল্লাহর অসীম শক্তির নিদর্শন। আমরা যেন এসব দৃশ্য দেখে আল্লাহর প্রতি আমাদের তাকওয়া বৃদ্ধি করি এবং কেয়ামতের চিন্তা করে তাওবা করি। সূর্য ও চন্দ্রের এই অস্থায়ী অদৃশ্যতা আমাদের জীবনের সুখ-দুঃখের মতোই, একসময় সব কিছু আবার ঠিক হয়ে যায়। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, "যারা দাঁড়িয়ে, বসে বা শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে, তারা চিন্তা করে আসমান ও জমিনের সৃষ্টির বিষয়ে।"
বিজ্ঞান ও ইসলামের ব্যাখ্যা থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই তা হলো, এসব মহাজাগতিক ঘটনা আমাদের আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে এবং তাঁর অসীম ক্ষমতার প্রতি শ্রদ্ধা বাড়াবে।
রনি/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ঈদের নির্দিষ্ট তারিখ জানালেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা
- ভারতকে শেষ ভাষায় বার্তা পাঠাল সেনাবাহিনী
- কমে গেল জ্বালানি তেলের দাম
- হঠাৎ কেন স্থান পরিবর্তন শেখ হাসিনার, নতুন ঠিকানা ফাঁস
- আজ ঈদের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে সৌদি আরব
- কলকাতায় আওয়ামী লীগের গোপন বৈঠক নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- বাংলাদেশে ঈদ সোমবার
- আবারও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশকে নতুন বার্তা
- এ বছর চাঁদ না দেখে ঈদ ঘোষণা করতে পারে সৌদি
- চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস; শেখ হাসিনা যাকে ফোন দিয়ে ৩০ মিনিট কেঁদেছিলেন
- এবার বাংলাদেশের রাস্ট্রপতির কাছে ভারতের বার্তা
- সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- সাব্বিরের চেন্নাইতে খেলার কথা ছিল এনওসি পাননি
- জুমার নামাজের সময় মিয়ানমারে ভূমিকম্প, মসজিদ ধসে নিহত অন্তত ২০ জন
- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গোপন তথ্য ফাঁস