ঢাকা, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

কড়া বার্তা দিলেন সেনাপ্রধান

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ২৬ ১১:১৩:০৩
কড়া বার্তা দিলেন সেনাপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক: হাসনাত এবং ক্যান্টনমেন্ট কাহিনীর পর, সারাদেশে সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান, গোটা জাতির নজর এখন তার নতুন বার্তার দিকে ছিল।

অফিসারস অ্যাড্রেসে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে যে বক্তব্য তিনি দিয়েছেন, তা শুধুমাত্র একটি প্রাতিষ্ঠানিক বার্তা ছিল না, বরং দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী যে দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে, তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সেনাপ্রধান সেনাবাহিনীর সদস্যদের গুজব, ভুল তথ্য এবং অপপ্রচারের বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকতে আহ্বান করেছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, যা বেশিরভাগই বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য মূলত সেনাসদস্যদের মনোবল অটুট রাখার এবং সত্যভিত্তিক দায়িত্ব পালনের জন্য একটি অনুপ্রেরণামূলক বার্তা ছিল।

তিনি বলেছেন, "কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্যে সেনাদের প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত নয়, কারণ প্রতিক্রিয়া জানানো মানে সেই উস্কানির লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করা।" এই নির্দেশনা শুধু বাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নয়, বরং বিশ্বমঞ্চে সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব রক্ষা করার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেনাপ্রধান ওয়াকারুজ্জামান সেনাবাহিনীকে একটি পেশাদার এবং নৈতিকতার ভিত্তিতে পরিচালিত বাহিনী হিসেবে তুলে ধরেন।

তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী শুধু অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষা করছে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সংকটময় পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর দৃঢ় এবং শান্তিপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস প্রশংসা করেছেন, যা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি শক্তিশালী করেছে।

সেনাপ্রধান সামনের ঈদ উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যও নির্দেশনা দিয়েছেন। ঈদ একটি সংবেদনশীল সময়, যেখানে কোনো উস্কানি বা নিরাপত্তার ঘাটতি দেশের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি দেশের জনগণের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তা সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর মানবিক ভূমিকা নিয়েও তিনি আলোচনা করেছেন। কক্সবাজারে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ইফতার আয়োজন ছিল একটি ব্যতিক্রমী মানবিক উদ্যোগ, যা বৈশ্বিক মানবাধিকার বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির শক্তিশালী উদাহরণ।

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তার প্রশংসা তুলে ধরে সেনাপ্রধান বলেন, এই কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব এবং কাজের পরিপূর্ণতা প্রমাণ করে, যা ভবিষ্যতে সামরিক সহযোগিতা এবং কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সেনাপ্রধান আহত শিক্ষার্থীদের পাশে সেনাবাহিনীর অবস্থান প্রসঙ্গে বলেন, "এই ধরনের পদক্ষেপ সেনাবাহিনীর মানবিক শক্তি এবং জনগণের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার উদাহরণ।"

সব মিলিয়ে সেনাবাহিনী এখন শুধুমাত্র একটি প্রতিরক্ষা বাহিনী নয়, বরং জাতীয় স্থিতিশীলতা, মানবিক সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার এক নির্ভরযোগ্য স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।

রানা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ