ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর থেকে বাংলাদেশ কি কি সুবিধা পেল

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ২৮ ২২:৪১:৩৭
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর থেকে বাংলাদেশ কি কি সুবিধা পেল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা চীনে একটি ব্যস্ত সফর করছেন, যেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ অন্যান্য সরকারি ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করছেন। এসব বৈঠক থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে নানা গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা, যা বিশদভাবে তুলে ধরেছেন ইমতিয়াজ আলম।

প্রধান উপদেষ্টার চার দিনের চীন সফরের তৃতীয় দিনে, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ওপর একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এই চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর ও দৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কালজয়ী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের অনুবাদ এবং সৃজন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও তথ্যের আদান-প্রদান, গণমাধ্যম, ক্রীড়া, এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা।

এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা চীনে পাঁচটি নতুন বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছেন। এসব বিষয় হলো:

1. বিনিয়োগ আলোচনা শুরু করা।2. চীনের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু করা।3. মংলাবন্দর আধুনিকীকরণ এবং সম্প্রসারণ।4. রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ।5. কার্ডিয়াক সার্জারি গাড়ির অনুদান।

এর আগে, বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের উপপ্রধানমন্ত্রী ডিং সুইংশিয়াং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বাংলাদেশের এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) গ্রাজুয়েশন নিয়ে আলোচনা হয় এবং চীন ঘোষণা করে যে, বাংলাদেশের বিদ্যমান শুল্ক ও কোটামুক্ত রপ্তানি সুবিধা আরও দুই বছর অব্যাহত থাকবে।

এ সময় চীনা কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানানো হয়। ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন অর্জন করবে এবং এরপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র তিন বছরের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখবে। কানাডাও একই সুবিধা দেওয়ার কথা বললেও, তারা এখনও আইনগত পরিবর্তন আনেনি।

এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা ও চীনের প্রেসিডেন্টের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যেখানে চীন বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিল্পায়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে। মংলাবন্দর আধুনিকীকরণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রামের চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চলে বিনিয়োগের বিষয়ে চীনা কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে।

যৌথ বিবৃতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, চীন ও বাংলাদেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা দ্রুত শুরু করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। বিশেষভাবে কৃষিপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আম রপ্তানি শুরু করতে চায় এবং দুই দেশের পক্ষ থেকে দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া, বন্যা পূর্বাভাস, নদী খরন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে চীন বাংলাদেশকে সমর্থন জানিয়েছে। তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে চীনা কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

চীনা নেতৃত্বকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ।

— ইমতিয়াজ আলম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ