পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে।

এই মনোনয়ন দিয়েছে পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স (PWA), যা নরওয়ের রাজনৈতিক দল পার্টিয়েট সেন্ট্রাম-এর সঙ্গে যুক্ত একটি আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থা।

পার্টিয়েট সেন্ট্রামের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা

রবিবার (৩১ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পার্টিয়েট সেন্ট্রাম ঘোষণা দেয়, "আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে পার্টিয়েট সেন্ট্রামের পক্ষ থেকে, একজন যোগ্য মনোনয়নকারীর মাধ্যমে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তার অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ এই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।"

ইমরান খানের আগের মনোনয়ন ও বিতর্ক

এর আগেও ২০১৯ সালে ইমরান খান দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। তবে নিজ দেশেই তাকে নানা বিতর্ক ও রাজনৈতিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে যে তিনি দেশে সংঘর্ষ ও দাঙ্গা উসকে দিয়েছেন এবং তার শাসনামল রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি করেছে।

নোবেল কমিটির কঠোর বাছাই প্রক্রিয়া

নরওয়ের নোবেল কমিটি প্রতিবছর শত শত মনোনয়ন পর্যালোচনা করে এবং প্রায় আট মাসের কঠোর বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিজয়ী নির্বাচন করে। দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইমরান খানের বর্তমান অবস্থা

ইমরান খান বর্তমানে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যা তার চতুর্থ বড় শাস্তি।

এর আগে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি, রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস এবং বিয়ের অনিয়মের অভিযোগে মামলা হয়েছিল। তবে উচ্চ আদালত তিনটি মামলায় তার সাজা বাতিল বা স্থগিত করেছে।

২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ইমরান খান দাবি করে আসছেন যে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা

নোবেল কমিটির দীর্ঘ পর্যালোচনার পর ২০২৪ সালের অক্টোবরে নোবেল শান্তি পুরস্কারের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। ইমরান খানের এই মনোনয়ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।