ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার উৎখাতের আহ্বান: শেখ হাসিনার উসকানিমূলক মন্তব্য ফাঁস

২০২৫ এপ্রিল ০৪ ০৯:৫১:০৬
সরকার উৎখাতের আহ্বান: শেখ হাসিনার উসকানিমূলক মন্তব্য ফাঁস

প্রবাসে থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার নির্দেশনা দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক ফোনালাপে তাকে বলতে শোনা যায়, "সংগঠিত হয়ে দুই গ্রুপে মাঠে নামতে হবে। যদি হামলা হয়, তাহলে পালটা হামলা চালাতে হবে।"

দলের একাংশের ক্ষোভ

দলের অনেক নেতাকর্মী তার এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, "যিনি সংকটের মুহূর্তে আমাদের ফেলে পালিয়ে গেছেন, তার কথায় আর কেউ মাঠে নামবে না। দলের বর্তমান দুরবস্থার জন্য তিনি ও তার আশপাশের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাই দায়ী।"

অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন, শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও সাধারণ নেতাকর্মীরা চরম বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন। দলীয় কার্যালয় পুনর্দখলের নামে সংঘর্ষে জড়ানোর আহ্বানকে তারা দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

নির্দেশনার বিশদ বিবরণ

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে শোনা যায়, দিল্লিতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা যুবলীগের এক শীর্ষ নেতাকে নির্দেশ দিচ্ছেন, "যত দ্রুত সম্ভব আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্ধার করতে হবে। ৫০-১০০ জন গেলেও কি তারা মেরে ফেলবে?"

তিনি আরও বলেন, "মিছিল ছোট করে নয়, বড় আকারে করতে হবে। সামনে ও পেছনে দুটি গ্রুপ থাকবে। কেউ হামলা করলে কঠোর জবাব দিতে হবে।"

একই ফোনালাপে যুবলীগের নেতা শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করে বলেন, "আপনার এক ডাকে আমরা লাখো কর্মী ঢাকায় আনতে পারবো।"

মামলার পরিকল্পনা

বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার জন্যও নির্দেশ দেন তিনি। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করো, ছবি তোল, ভিডিও করো এবং মামলা দায়েরের উদ্যোগ নাও।"

নেতাকর্মীরা জানান, ইতোমধ্যে কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, তবে শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী আরও ব্যাপকভাবে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, "বিদেশে বসে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে যারা উসকানি দিচ্ছেন, তারা আসলে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করছেন। কিন্তু সাধারণ নেতাকর্মীরা কেন তাদের জন্য জীবন বিপন্ন করবে?"

তিনি আরও বলেন, "গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা হারানোর পরও দলটি তাদের শাসনামলকে গৌরবান্বিত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের রোষের মুখে পড়ার পরও তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। বরং তারা ফের ক্ষমতায় ফেরার ষড়যন্ত্র করছে।"

পরিস্থিতির পটভূমি

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে যান। সেখান থেকেই তিনি দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এখনো বিভক্ত এবং দিকহীন অবস্থায় রয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ তার নেতৃত্বে অনাস্থা প্রকাশ করলেও, তিনি এখনো পুরনো কৌশলে দল পরিচালনা করতে চাইছেন। এতে দলের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত