ঢাকা, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশে নতুন যুগের সূচনা: হাসিনার খেলার সমাপ্তি

২০২৫ এপ্রিল ০৬ ১৮:১১:০৫
বাংলাদেশে নতুন যুগের সূচনা: হাসিনার খেলার সমাপ্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংককের সেই গোপন কক্ষে আলো নিভে গিয়েছিল, কিন্তু বাইরে এক অদৃশ্য ঝড় উঠেছিল। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন অধ্যায় লিখিত হচ্ছিল, এবং সেই সময় হাসিনার জন্য দুনিয়ার বাস্তবতা বদলে যাচ্ছিল। শেখ হাসিনা, যিনি একসময় বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন একচ্ছত্র নেতা ছিলেন, তার পতন ছিল অতীতের দীর্ঘ অমোচনীয় দাগের প্রতিফলন। তার রাজনীতির মঞ্চের আলো নিভে যাচ্ছিল, আর ব্যাংককের সেই গোপন বৈঠকে তার স্বপ্নগুলো যেন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল। হাসিনার রাজনৈতিক খেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে, তবে তার শাসনকাল কিভাবে শেষ হবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

মোদি এবং ইউনুসের বৈঠকটি কেবল কূটনৈতিক আলাপ ছিল না, এটি ছিল একটি রাজনৈতিক সংকেত, যা এক মুহূর্তে আকাশচুম্বী অহংকারের পতন ঘটিয়ে দিয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তব্য শুধু একটি মন্তব্য ছিল না, এটি ছিল একটি ইঙ্গিত — 'বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্ক চাওয়া'। ভারত তার অবস্থান বদলানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল। মোদি তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশে একমাত্র জনগণেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, এবং ভারতের জন্য এটি ছিল একটি বড় কৌশলগত পদক্ষেপ।

শেখ হাসিনার শাসনামলে যে আচরণ তাকে শিকার হতে হয়েছিল, তা শুধু একটি রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্ধকার দাগ ছিল না, বরং একটি জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক অধ্যায় ছিল। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে তাকে অপসারণ, মিথ্যা মামলা, এবং তার কাজের প্রতি অবজ্ঞা – এসব কিছু ছিল ক্ষমতার একচ্ছত্র দম্ভের ফল। কিন্তু যখন মোদি নিজেই এই অপমানিত নেতার পাশে দাঁড়িয়েছেন, তখন তা শুধু ভারতের কূটনৈতিক মনোভাবকেই নয়, বরং শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের নিরব অসন্তুষ্টি এবং তাদের সম্পর্কের পরিবর্তনকে প্রকাশ করেছে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ইউনুস এবং মোদির সম্পর্কের এই নতুন বাঁক। ইউনুস, যিনি একদিন হাসিনার আক্রমণের শিকার ছিলেন, আজ ভারতের কূটনৈতিক মঞ্চে সম্মান পাচ্ছেন। ভারত তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ, কিন্তু এই সম্পর্কের পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে: হাসিনার জন্য ভারতের দরজা আর খোলা নেই।

বৈঠকের আলোচনার সময়, মোদি ডক্টর ইউনুসের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন এবং তার অবদানের প্রশংসা করেছেন, তবে পরবর্তী মন্তব্য ছিল হাসিনার আমলে তার বিরুদ্ধে হওয়া অবমাননার বিষয়ে। মোদি যে কথাগুলি বলেছিলেন, তা যেন হাসিনার রাজনৈতিক পথের শেষ সিগন্যাল ছিল। একদিকে মোদির সম্মান, আর অন্যদিকে হাসিনার আমলে ডক্টর ইউনুসের প্রতি অমানবিক আচরণ — এর মধ্যে একটি স্পষ্ট ধারার প্রতিফলন ঘটছিল।

বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে, যেখানে কিছুই স্থায়ী নয়, সেখানে শেখ হাসিনার মতো একজন নেত্রীও এক পলকে হারিয়ে যেতে পারেন। মোদি এবং ইউনুসের বৈঠক একে অপরের মাঝে একটি নতুন সম্পর্কের সূচনা করছে, যেখানে অতীতের শত্রুতা মুছে গেছে। আর এই সম্পর্কের পরিবর্তনই ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আরও গভীর কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক সমঝোতার পথ খুলে দেবে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, হাসিনার জন্য কি কিছুই অবশিষ্ট রইল? তার শাসন আমলের বহু শত্রু তার অঙ্গুলির ইঙ্গিতেই ভেঙে গেছে, এবং আজ তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর থেকে বাদ পড়ে গেছেন। তবে, শেখ হাসিনা কি একদিন ভারতের দরজা ফের খুলে পেতে পারবেন? নাকি তার শাসনের অবসান হবে বাংলাদেশের মাটিতে?

হাসিনার রাজনৈতিক পতনের এই খেলা কিন্তু এখানেই থেমে থাকবে না। আন্তর্জাতিক রাজনীতি কখনো শেষ হয় না, এবং মোদির এই বৈঠকের পর কিছুই নির্ধারিত নয়। কিন্তু একটি বিষয় সন্দেহাতীত, শেখ হাসিনার জন্য সময় শেষ হতে চলেছে।

বাংলাদেশের রাজপথে স্বৈরাচারের শতাব্দী শেষ হয়ে গেছে, আর এখন তার স্থানে এক নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। নতুন নেতাদের নেতৃত্বে, বাংলাদেশের জনগণ নতুন আশায় পথচলা শুরু করেছে।

হাসিনার যাত্রার শেষের মুহূর্তগুলো যখন তার কাছে পৌঁছাবে, তখন হয়তো সে বুঝতে পারবে যে, তার অন্ধকার কক্ষে ঝড়ের দিনগুলি আর অতীত হতে চলেছে। রাজনৈতিক মঞ্চে, তার খেলার যবনিকা পতন ঘটবে, কিন্তু এর পরও কি তার জন্য নতুন কোনো পথ খোলা থাকবে? সেটা সময়ই বলতে পারবে।

— সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত