ঢাকা, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১

৫০ অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প বিরোধী লাখ লাখ মানুষের বিক্ষোভ

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ০৭ ১১:৫৫:৫৩
৫০ অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প বিরোধী লাখ লাখ মানুষের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি শহরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার উপদেষ্টা, ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। 'ট্রাম্পের পদত্যাগ চাই', 'গণতন্ত্র মুক্তি পাক', 'আমাদের কোনো রাজা নেই'—এমন স্লোগান নিয়ে ৫ এপ্রিল শনিবার যুক্তরাষ্ট্র এক বড় আন্দোলনের সাক্ষী হয়ে ওঠে।

এছাড়া ইউরোপের কিছু দেশ, বিশেষত লন্ডনেও, বিক্ষোভকারীরা রাজপথে নেমে ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা দাবি করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতা হরণ করছেন।

এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যান্ডস অফ’। মানবাধিকার কর্মীসহ প্রায় ১৫০টি সংগঠন এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছে। ওয়াশিংটন, নিউইয়র্ক, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, কলোরাডো, মিনেসোটা, ক্যারোলাইনা, ডেলাওয়ারসহ সব অঙ্গরাজ্যের প্রধান শহরগুলোতে ১,৪০০টিরও বেশি বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 'ইনডিভিজিবল' নামক একটি সংগঠনের তথ্যমতে, শনিবারের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করতে প্রায় ছয় লাখ মানুষ সই করেছেন।

বিক্ষোভের আয়োজকদের মধ্যে ছিল নাগরিক অধিকার সংস্থা, নারী অধিকার গোষ্ঠী, শ্রমিক সংগঠন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের সংগঠন এবং এলজিবিটিকিউ+ অধিকারকর্মীরা। তাদের তিনটি মূল দাবি ছিল: ১. ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে বিলিয়নিয়ারদের দখলদারি ও দুর্নীতি বন্ধ করা। ২. ‘মেডিকেইড’ এবং অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য অর্থায়ন বন্ধ না করা। ৩. অভিবাসী, ট্রান্সজেন্ডার এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বন্ধ করা।

বিক্ষোভের সবচেয়ে বড় সমাবেশ ছিল রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে। ইনডিভিজিবলের সহপ্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন রয়টার্সকে জানান, এই বিশাল বিক্ষোভের মাধ্যমে তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য এবং তাদের মিত্রদের পরিষ্কার বার্তা দিতে চান, যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না।

ওয়াশিংটন মনুমেন্টের নিচে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া নিউ জার্সির অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী টেরি ক্লেইন বলেন, "আমি এখানে এসেছি ট্রাম্পের সব নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। আমাদের দেশটার ওপর হামলা হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা হয়েছে, যেগুলো নিয়ে আমেরিকা গঠিত।"

দিনের পর দিন বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে, তাদের হাতে ছিল ট্রাম্প ও মাস্কবিরোধী স্লোগান লেখা ব্যানার। কিছু বিক্ষোভকারী ইউক্রেনের পতাকা এবং ফিলিস্তিনের মুক্তির দাবি তুলে প্ল্যাকার্ডও প্রদর্শন করেন।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মামলা করা হয়েছে। কিছু আদেশ আদালত স্থগিত করেছে। এছাড়া, ট্রাম্পের গঠন করা ‘ডিওজিই’ সংস্থাটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইলন মাস্ককে, যার ফলে ১ লাখ ২১ হাজার সরকারি কর্মচারী ছাঁটাই হয়েছে।

মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোর শহরের সামাজিক নিরাপত্তা প্রশাসনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানান, যেখানে বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ ভাতায় কাটছাঁট করা হয়েছে। ৬৪ বছর বয়সী লিন্ডা ফ্যালকা বলেন, "আমি আতঙ্কিত, আমি ক্ষুব্ধ।"

নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে, বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্পের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে মিছিল করেন। শাইনা কেসনার (৪৩) বলেন, "আমি খুবই ক্ষুব্ধ। বিশেষ সুবিধা পাওয়া একদল শ্বেতাঙ্গ, যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে, তারা আমাদের দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে।"

এছাড়া, ওয়াশিংটনে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট সদস্য জেমি রাসকিন বলেন, "যিনি মুসোলিনির মতো রাজনীতি করেন এবং হারবার্ট হোভারের মতো অর্থনীতি সামাল দেন, তার অধীনে দেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।"

ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যেও বিক্ষোভকারীরা বড় জমায়েত করেন, এবং প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ম্যাক্সওয়েল ফ্রস্ট মন্তব্য করেন, "কর্তৃত্ববাদীরা কখনো সন্তুষ্ট থাকে না, তারা আইন ভাঙে এবং জনগণের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করে।"

পূর্বে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং নাগরিকদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানান।

রকি/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত