ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশে শুল্ক কমানো নিয়ে ট্রাম্পের বিশেষ বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ০৯ ২০:১৮:১৪
বাংলাদেশে শুল্ক কমানো নিয়ে ট্রাম্পের বিশেষ বার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২ এপ্রিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি অবিস্মরণীয় ঘোষণা করে সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছেন। তিনি একসঙ্গে ১৯৫টি দেশের ওপর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা আজ থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে। এই ঘোষণার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে এবং মার্কিন মূলধন বাজার থেকে ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি পুঁজি গায়েব হয়েছে। দেশটির শেয়ার বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশের ওপরও ট্রাম্প ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যার ফলে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্য মার্কিন বাজারে প্রবেশ করতে গেলে ৫২ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এই শুল্ক বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় একটি প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি।

এদিকে, গত পরশু রাতে হোয়াইট হাউস সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প শুল্ক কমানোর সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি কোন দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সক্ষম হয়, তাহলে শুল্ক হার পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। ট্রাম্প আরও জানান, যে দেশ যত দ্রুত আলোচনা শুরু করবে, তাকে তত বেশি স্বাগত জানানো হবে। তিনি বিশেষভাবে তিনটি মার্কিন পণ্যের কথা উল্লেখ করেছেন—মার্কিন গাড়ি, জ্বালানি পণ্য এবং কৃষি পণ্য।

ট্রাম্প জানান, অনেক দেশ তার সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চাচ্ছে, তবে তিনি সব দেশের নাম উল্লেখ করেননি। বাংলাদেশও সরাসরি ট্রাম্পকে শুল্ক হার পুনর্বিবেচনার জন্য চিঠি পাঠিয়েছে এবং তিন মাস সময় চেয়েছে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ যদি কার্যকরভাবে নেগোসিয়েশন করে, তবে মার্কিন শুল্ক যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না।

বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ১০০টি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি পণ্য আমদানি করার জন্য মাল্টি-ইয়ার চুক্তি করেছে, যা দ্রুত কার্যকর হলে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি পূর্ণ হবে। গতকাল, প্রধান উপদেষ্টা এক্সেলারেট এনার্জির স্ট্র্যাটেজিক উপদেষ্টা পিটার ডি হাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যা থেকে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন জ্বালানি খাতের কথাও উল্লেখ করেছেন, তিনি বলেছেন, সৌদি আরব বা বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশি জ্বালানি পণ্য রয়েছে। তার এই বক্তব্যে তিনি দেশগুলোকে মার্কিন জ্বালানি পণ্য আমদানি করতে উৎসাহিত করেছেন। পাশাপাশি, মার্কিন কৃষি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশে সুযোগ রয়েছে, কারণ বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণে সয়াবিন তেলবীজ, গম ইত্যাদি আমদানি করে। যদিও বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ, তবুও এসব পণ্যের বাণিজ্যিক উৎপাদন সম্ভব হয় না, তাই আমদানির মাধ্যমে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি থেকে বাঁচা যাবে বলে ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন।

আরেকটি বড় সুযোগ বাংলাদেশের জন্য হলো তুলা। বাংলাদেশ মার্কিন তুলার পঞ্চম বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ, তাই এই খাতের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দরকষাকষির সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে বসে নেই। দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে আরও বেশি প্রবেশ করতে চাচ্ছে, যাতে মার্কিন শুল্ক যুদ্ধের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এই লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি চুক্তি প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে, ট্রাম্প ইতিমধ্যে চীনের ওপর ১০২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা আজ থেকে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা সদ্য সমাপ্ত চীন সফরের মাধ্যমে চীনা বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছেন, যা এখনও অটুট থাকবে বলে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করছেন।

এইভাবে, বাংলাদেশ মার্কিন শুল্ক নীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে নিজের বাণিজ্যিক অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, এবং আশাবাদী যে সঠিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দেশটি এই শুল্ক যুদ্ধ থেকে রক্ষা পাবে।

আসাদ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আজকের সোনা ও রূপার দাম; ২১ এপ্রিল

আজকের সোনা ও রূপার দাম; ২১ এপ্রিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে সোনার বাজারে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলেও, ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) কর্তৃক... বিস্তারিত

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত