ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

তিস্তা ব্যবহার করে ভারতকে বিপদে ফেলবে বাংলাদেশ

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১২ ১৮:৫৫:৫৮
তিস্তা ব্যবহার করে ভারতকে বিপদে ফেলবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দিল্লির রাত গভীর হয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মৃদু আলোয় জ্বলছে আলো। টেবিলে ছড়িয়ে রয়েছে শিলিগুড়ি করিডরের মানচিত্র। ভারতের চিকেন স্নেকের সরু গলার কাছেই আঁকা রয়েছে তিস্তা নদী। মোদির চোখে আতঙ্কের ছায়া, কপালে চিন্তার গভীর রেখা। সামনে রাখা গোয়েন্দা রিপোর্টের লাল ফাইলটি খোলা, যেখানে বাংলাদেশের তিস্তা নিয়ে চীন-ভারত সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে একটি পরিকল্পনা রয়েছে। বাইরে বাতাসে এক অশুভ শব্দ ভেসে আসে, যেন তিস্তার ঢেউ ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। মোদির চোখ জানালার দিকে, কানে আসে চীনের গর্জন—ভারতের নিরাপত্তা বিপন্ন হতে চলেছে।

তিস্তা নদী বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের জীবন্ত হৃদপিণ্ড। ৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী সিকিম থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত। কিন্তু ভারত বছরের পর বছর ধরে এই নদীকে নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে। গজলডুবা বাঁধে শুকনো মৌসুমে পানি আটকে উত্তরবঙ্গকে খরা দেয়, আবার বর্ষায় অতিরিক্ত পানি ছাড়ে, যা বন্যার সৃষ্টি করে। ২০২৩ সালে তিস্তার বন্যায় রংপুর ও কুড়িগ্রামে ১৮,০০০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যায়, আর ২০২৪ সালে ভূগর্ভস্থ পানির সংকটের কারণে ১২ লাখ হেক্টর জমি অনাবাদী হয়ে পড়ে। কৃষক রশিদ মিয়া বলেছিলেন, "ভারত আমাদের ফসল শুকিয়ে মারে, বর্ষায় সব ভাসিয়ে দেয়।"

ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এই পানি নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ১৯৮৩ সালে পানি বণ্টন নিয়ে একটি খসড়া চুক্তি হলেও তা কার্যকর হয়নি, আবার ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় আরেকটি সমঝোতা বাতিল হয়ে যায়। ভারতের প্রতিশ্রুতিগুলো ছিল নিছক প্রতিশ্রুতি, বাস্তবে কিছুই হয়নি।

এবার বাংলাদেশ তিস্তার নিজের সীমানায় পাল্টা প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনায় বাঁধ, জলাধার এবং সেচ ব্যবস্থার প্রস্তাব রয়েছে। যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তবে বাংলাদেশ পানি নিয়ন্ত্রণে ভারতের নির্ভরতা ৬০ শতাংশ কমাতে পারবে। তিস্তা নদীর ৫০০ কিলোমিটার তীর পুনর্গঠনও সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল মতিন বলেছেন, "এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ তার পানির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে।" আর চীনের সহায়তায় এই প্রকল্প এগিয়ে চলছে। ২০১৯ সালে চীন বাংলাদেশকে ১০০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছিল। সম্প্রতি, প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুসের বেইজিং সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আশ্বাস দিয়েছেন যে, তিস্তা প্রকল্পে চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

এটি শুধুমাত্র একটি প্রকল্প নয়, এটি বাংলাদেশের আত্মমর্যাদারও জয়। শিলিগুড়ি করিডরের কাছে চীনা উপস্থিতি ভারতের জন্য একটি কৌশলগত বিপদ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শিলিগুড়ি করিডর ভারতের উত্তর-পূর্বের সাত রাজ্যের একমাত্র যোগাযোগ পথ। তিস্তা নদীতে চীনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, সেখানে চীনা প্রকৌশলী, শ্রমিক এবং গোয়েন্দাদের উপস্থিতি ভারতের জন্য বিপদজনক হতে পারে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া লিখেছে, "চীনের উপস্থিতি ভারতের চিকেন স্নেককে বিপন্ন করবে।"

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছে, চীনের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী এবং অভিজ্ঞ। চীনা গোয়েন্দারা তিস্তা নদীতে অবস্থান নিলে, শিলিগুড়ির সামরিক তথ্য চীনের হাতে চলে যেতে পারে। ভারতীয় গোয়েন্দারা সতর্ক করেছে যে, চীনা গোয়েন্দারা ড্রোন, স্যাটেলাইট এবং স্থানীয় নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ভারতের গোপন সামরিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

ভারতের জন্য এটি শুধু সামরিক ঝুঁকি নয়, এটি একটি অর্থনৈতিক চাপও সৃষ্টি করবে। তিস্তার পানি আটকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন কমে যাবে। তাছাড়া, চীনের প্রভাব বাংলাদেশের ওপর বাড়লে ভারতের আঞ্চলিক আধিপত্যও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। *দ্য হিন্দু* এক প্রতিবেদনে লিখেছে, "চীন তিস্তায় এলে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব হারাবে।"

ভারত এখন শিলিগুড়িতে ২০,০০০ সৈন্য মোতায়েন করেছে, কিন্তু চীনের গোয়েন্দা শক্তির সামনে এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। ২০২০ সালে লাদাখে চীনা গোয়েন্দারা ভারতীয় সেনার গতিবিধি আগেই জানত। তিস্তা নদীতে চীনা উপস্থিতি ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের নিরাপত্তা বিপন্ন করে ফেলবে।

বাংলাদেশের কৃষকরা বলছেন, "ভারত আমাদের বাঁচতে দেয়নি, কিন্তু তিস্তা প্রকল্পে আমাদের কষ্ট মুছবে।" চীনের সহায়তায় পানি নিয়ন্ত্রণে আসলে, কৃষকরা তাদের জমিতে নতুন প্রাণ ফিরিয়ে আনতে পারবেন, এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ তার আত্মমর্যাদা ফিরে পাবে।

ঢাকায়, প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস দাঁড়িয়ে হাসছিলেন। মোদি তার কাছে এসে দেখলেন, বাংলাদেশ শোষণের সমস্ত দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। তিস্তার ঢেউয়ে হাসির ঝিলিক, বাংলাদেশের মাটিতে নতুন বিজয়ের আলো। মোদি জানালার দিকে তাকালেন, কিন্তু বাইরে শুধু অন্ধকার—যেন তিস্তা বলছে, "এবার আমার পালা।"

ট্যাগ: তিস্তা

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত