ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

ভূমিকম্পের ভয়ের ছায়ায় ঢাকা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১২ ২০:০২:৫৩
ভূমিকম্পের ভয়ের ছায়ায় ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক; বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা—দেশের হৃদপিণ্ড—এই শহর যেন দাঁড়িয়ে আছে এক ভয়ংকর শঙ্কার মুখে। সম্প্রতি মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া বিধ্বংসী ভূমিকম্পের প্রভাব এসে লেগেছে ঢাকাতেও।

বিশ্বে ভূমিকম্প কখনোই পূর্বঘোষিত হয় না। কিন্তু ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছোট ছোট কম্পন ভবিষ্যতের বড় ধ্বংসের পূর্বাভাস দিতে পারে। মিয়ানমারের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটেছিল—বারবার হালকা কম্পন হলেও বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু একদিন, সে দেশ সাক্ষী হয় শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ানক ভূমিকম্পের।

আজ সেই একই অশনি সংকেত যেন ভেসে বেড়াচ্ছে ঢাকার আকাশে।

গত ১১ এপ্রিল বিকেল ৪টা ৫২ মিনিটে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪, স্থায়িত্ব কয়েক সেকেন্ড হলেও কম্পনের অভিঘাত সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভূমিকম্প নিছক কাঁপুনি নাও হতে পারে; এটি হতে পারে ভবিষ্যতের বড় বিপর্যয়ের আগাম বার্তা।

একই দিনে মিয়ানমারেও ৪.১ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়, যার গভীরতাও ছিল ১০ কিলোমিটার। আর বাংলাদেশে অনুভূত ভূমিকম্পটির উৎস ছিল ভারতের আগরতলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার উত্তরে এবং বাংলাদেশের কুমিল্লা শহর থেকে ৬৮ কিলোমিটার দূরে।

বিশেষজ্ঞদের শঙ্কার মূল কারণ হলো ভূমিকম্পের এই অগভীর উৎস। সাধারণত ভূমিকম্প ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার গভীরে সংঘটিত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলো ঘটছে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে—যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

২০২৩ সালের মার্চে মিয়ানমারে সংঘটিত ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন ৩,৬০০-এরও বেশি মানুষ। আহত হন আরও ৫,০০০। শতাব্দীপ্রাচীন স্থাপনাগুলোও রেহাই পায়নি সেই কম্পনে।

মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অংশে একটি সুবিশাল ভূ-চ্যুতি (ফল্ট লাইন) বিস্তৃত রয়েছে। এর অর্থ, একটি দেশে ভূমিকম্প হলে পাশের দেশগুলোতেও যে কোনো সময় এর অভিঘাত পড়তে পারে।

ঢাকার অধিকাংশ ভবন এখনও ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও পুরান ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণা বলছে, ৮ মাত্রা বা তার বেশি ভূমিকম্প হলে ঢাকায় ৬,০০০ ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়বে এবং সম্ভাব্য প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে ৩ লাখ।

ভূমিকম্পের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের অভিজ্ঞতা, আতঙ্ক ও পরামর্শ। কেউ কেউ জানান, কীভাবে তারা ভবনের দোতলা থেকে দ্রুত নিচে নেমে যান, কেউ আবার সতর্ক করে বলেন—“এটা হয়তো শুধুই শুরু”।

প্রবচন আছে, “যত গর্জে তত বর্ষে না।” কিন্তু প্রকৃতি যখন চায়, তখন সামান্য গর্জনেই ধ্বংস নামিয়ে আনতে পারে পুরো একটি শহরের উপর।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত