ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

কলকাতার রোজডেল গার্ডেন: আওয়ামী লীগের অস্থায়ী ‘সদর দপ্তর’

২০২৫ এপ্রিল ১৪ ২১:৫৯:৩৪
কলকাতার রোজডেল গার্ডেন: আওয়ামী লীগের অস্থায়ী ‘সদর দপ্তর’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে নতুন এক বাস্তবতা সামনে এসেছে— আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এখন রয়েছেন ভারতের কলকাতায়। এবং সেখান থেকেই দলীয় কর্মকাণ্ড, কৌশল নির্ধারণ ও যোগাযোগ পরিচালনা করছেন বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

কলকাতার অভিজাত নিউটাউন এলাকার বিলাসবহুল আবাসিক প্রকল্প ‘রোজডেল গার্ডেন’ বর্তমানে যেন রূপ নিয়েছে আওয়ামী লীগের এক ‘অস্থায়ী সদর দপ্তরে’। সেখান থেকেই চলছে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম, সরকারের বিরুদ্ধে কৌশল নির্ধারণ, এমনকি আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগ।

৫ আগস্টের ক্ষমতা পরিবর্তনের পর শতাধিক নেতা কলকাতায় আশ্রয় নেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোজডেল গার্ডেনের ১১তলায় নিজের ফ্ল্যাটে অবস্থান করছেন এবং নিচতলায় দলীয় বৈঠক করছেন প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, নতুন সরকারের বিরুদ্ধে যে কৌশলগত পরিকল্পনা গঠিত হচ্ছে, তার একটি বড় অংশই তাঁর তত্ত্বাবধানে।

সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের-ও রয়েছেন কলকাতার আরেকটি অভিজাত আবাসনে, যদিও তিনি কিছুটা আড়ালে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া দলের অন্য সিনিয়র নেতাদের মধ্যে রয়েছেন— জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুবুল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাসিম, এসএম কামাল হোসেন, এনামুল হক শামীম, অসীম কুমার উকিল ও তাঁর স্ত্রী সাবেক এমপি অপু উকিল।

তাদের সঙ্গে আছেন নৃণ কান্তি দাস, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, আওলাদ হোসেন, এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ভাই টিপু।

এদের মধ্যে অনেকেই সক্রিয়ভাবে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, টেলিগ্রাম ও সিগনালের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। রোজডেল গার্ডেনে গড়ে উঠেছে একধরনের ‘কমিউনিটি হাব’, যেখানে দলীয় অনুষ্ঠান, ঈদের মিলনমেলা ও ঘরোয়া বৈঠক নিয়মিত হচ্ছে।

শুধু শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাই নয়, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের অনেক নেতা-কর্মীও আশ্রয় নিয়েছেন কলকাতার বিভিন্ন অংশে। ধারণা করা হচ্ছে, এখান থেকেই আগামী দিনের রাজনৈতিক পুনর্গঠন, কর্মপরিকল্পনা ও পুনরুদ্ধারের ছক তৈরি হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই ভারত-ঘনিষ্ঠ একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিচিত। শেখ হাসিনার আমলে ভারত এই সম্পর্ক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুবিধা পেয়েছে। ফলে দলটি বিপদে পড়লে ভারতের ‘সহানুভূতি’ পাওয়া অস্বাভাবিক নয়।

তবে প্রশ্ন উঠছে— দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি বা ‘রিমোট কন্ট্রোলড রাজনীতি’ আদৌ টেকসই হবে কি না? বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের জনগণ যে রাজনৈতিক পরিবর্তন চেয়েছে, তা উপেক্ষা করে ‘সীমান্তের ওপার থেকে’ রাজনীতি টিকিয়ে রাখা সহজ হবে না।

সবকিছু মিলিয়ে রোজডেল গার্ডেন এখন শুধু একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট নয়— বরং তা হয়ে উঠেছে এক বিতর্কিত রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু।

রাসেল/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

আজকের সোনা ও রূপার দাম; ২১ এপ্রিল

আজকের সোনা ও রূপার দাম; ২১ এপ্রিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে সোনার বাজারে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলেও, ২০২৫ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) কর্তৃক... বিস্তারিত

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

হামজার কারণে সিঙ্গাপুর হারল

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস খুবই উচ্চ পর্যায়ে। সিঙ্গাপুরের তুলনায় সব দিক থেকেই... বিস্তারিত