ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শেষ সাকিবের ওয়ানডে ক্যারিয়ার, বিসিবি থেকে আসলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

ক্রিকেট ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৪ অক্টোবর ২৬ ১১:৪৮:৫৫
শেষ সাকিবের ওয়ানডে ক্যারিয়ার, বিসিবি থেকে আসলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

সাকিবের সাথে যে বিসিবির বোঝাপড়া মোটেও ভালো যাচ্ছে না সেটা বলার আর বাকি নাই। সাকিবের মতো বিশ্বমানের ক্রিকেটারের জন্য অবসরের উপযুক্ত সময় এবং সম্মানজনক বিদায় দেওয়ার দায়িত্বটি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বিসিবির কৌশলগত সিদ্ধান্তও ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন তৈরি করছে। কিন্তু তার বিদায়ী সংবর্ধণা ভাল যাবে না সেটা বলার বাকি নাই।

সদ্যশেষ হওয়া ভারত সিরিজে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ভারত সিরিজ তার শেষ টেস্ট ম্যাচ, কিন্তু তিনি আশা করেছেলেন যে বাংলাদেশে এসে অবসর গ্রহণ করবেন। তিনি চেয়েছিলেন দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলতে। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে সেই ম্যাচে অংশ নিতে না পারায় সাকিবের এই ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে গেছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা তার জন্য যেটুকু সম্মানজনক ছিল, সেই সুযোগও হাতছাড়া হয়ে গেছে। একইভাবে, টি-টোয়েন্টিতে ২০২৪ বিশ্বকাপকে নিজের শেষ টুর্নামেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। তবে বিসিবি যদি তাঁকে টি-টোয়েন্টি দলে রাখতে না চায়, তাহলে এই ফরমেটেও তাঁর বিদায়টি অঘোষিতভাবেই হতে পারে।

টেস্ট, টি-টোয়েন্টিতে অবসর নিলেও তিনি পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে শেষ ওয়ানডে খেলবেন। তবে বিসিবি এখনও নিশ্চিত করেনি যে তাকে সেই প্রতিযোগিতায় খেলতে দেওয়া হবে। নির্বাচকরা জানিয়েছেন যে, আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজে সাকিবকে রাখা হবে কিনা, সে বিষয়ে বিসিবির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সাকিবের বিপক্ষে থাকা বোর্ড পরিচালকরা মনে করছেন, সাকিবকে বাদ দিলে দলের নেতৃত্ব ও পরিবেশ আরও সুসংহত হবে এবং নতুন প্রজন্মের খেলোয়াড়রা নেতৃত্বের সুযোগ পাবে।

বাংলাদেশে খেলোয়াড়দের জন্য অবসর নেওয়ার ব্যবস্থা সবসময়ই সুশৃঙ্খল নয়, বিশেষত জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত তারকাদের জন্য। সাকিব আল হাসানের মতো বিশ্বমানের একজন ক্রিকেটার, যিনি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেশের হয়ে খেলছেন, তাঁর বিদায় যদি সত্যিই সম্মানজনকভাবে না হয়, তবে তা ক্রিকেট ইতিহাসে একটি অপ্রত্যাশিত নজির হয়ে থাকবে। বিসিবি যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে সাকিবকে দলের বাইরে রেখে নতুন নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাবে, তাহলে সাকিবের বিদায়টিও অনানুষ্ঠানিকভাবে হয়ে যেতে পারে, যা একজন কিংবদন্তির জন্য হতাশাজনক।

যদি সাকিবকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেওয়ার কোনো সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোই হয়ে উঠবে তাঁর খেলার একমাত্র ক্ষেত্র। ইতোমধ্যে সাকিব নিয়মিতভাবে আইপিএল, সিপিএল এবং বিপিএলের মতো লিগে অংশগ্রহণ করছেন, যা তাঁকে বিশ্বমঞ্চে উপস্থিত রাখছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিদায়ের পর, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটই তার খেলার মাঠ হতে পারে, যেখানে তাঁর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বহাল থাকবে। তবে জাতীয় দলের হয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিদায় না পেলে, সাকিবের বিদায় আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে, যা বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি বড় শূন্যতার সৃষ্টি করবে।

কথার কথা যদি সাকিবের অবসর সঠিকভাবে না হয় তাহলে তাহলে বিসিবির কার্যকলাপ নিয়ে উঠবে নানা ধরনের প্রশ্ন। জাতীয় দলের এমন একজন প্রতিভাবান অলরাউন্ডার, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে দেশের হয়ে অবদান রেখে চলেছেন, তাঁকে সম্মানজনকভাবে বিদায় জানানো বিসিবির দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। একজন কিংবদন্তির বিদায় যদি বিতর্কিত হয়, তাহলে তা শুধু ক্রিকেটার নয়, বরং পুরো দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সাকিব আল হাসানের মতো একজন বিশ্বমানের ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার যদি অঘোষিতভাবেই শেষ হয়ে যায়, তাহলে সেটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের একটি অসম্পূর্ণ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত অধ্যায় হয়ে থাকবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে