ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

শীতের শুরুতে জ্বর-সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৪ নভেম্বর ২৯ ০৭:২০:৪৩
শীতের শুরুতে জ্বর-সর্দি-কাশি থেকে বাঁচার উপায়

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রার তারতম্য, ধুলোবালি এবং শুষ্ক আবহাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অনেকেই এসময় জ্বর, সর্দি, কাশি এবং গলাব্যথার সমস্যায় ভোগেন। শীতের এই সময়ে বিশেষভাবে সচেতন না হলে এসব রোগ সহজেই দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে প্রয়োজন কয়েকটি সহজ অভ্যাস রপ্ত করা।

শীতে অসুস্থতা কেন বাড়ে?

শীতকালে তাপমাত্রা কমে গেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। পাশাপাশি, ধুলোবালি এবং বাতাসে ভেসে থাকা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সহজেই সংক্রমণ ঘটায়। যারা শ্বাসতন্ত্রের রোগে ভুগছেন বা যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য এই সময়টা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

জ্বর-সর্দি-কাশি এড়াতে ৭টি কার্যকর পরামর্শ

শীতের এই সময় সুস্থ থাকতে বিশেষজ্ঞদের মতে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলা উচিত।

১. পোশাকে সতর্কতা

ভোর বা রাতে তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যেতে পারে। তাই বাইরের কাজ বা যাতায়াতের সময় গরম পোশাক এবং স্কার্ফ ব্যবহার করুন। যারা বাইক চালান, তারা গলা ঢেকে নিন এবং হাত-মুখ সুরক্ষিত রাখুন।

২. ঠান্ডা পানিতে গোসল নয়

যাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি, তারা ঠান্ডা পানিতে গোসল করার বদলে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। সকাল হোক বা সন্ধ্যা—যে সময়ই গোসল করুন, তা যেন গরম পানিতে হয়।

৩. লবণ পানিতে গার্গল ও গরম ভাপ

সর্দি-কাশি শুরু হওয়ার আগেই নিয়মিত লবণ পানি দিয়ে গার্গল করুন। গরম পানির ভাপ নেওয়া শ্বাসতন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি ঠান্ডাজনিত সমস্যা কমাতে কার্যকর।

৪. সংক্রমণ থেকে দূরে থাকুন

বাড়ি বা অফিসে যদি কারও সর্দি-কাশি থাকে, তার কাছাকাছি যাওয়া এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে নিজে মাস্ক ব্যবহার করুন এবং তাকে মাস্ক পরতে বলুন। ঘন ঘন হাত ধুতে হবে এবং হাত না ধুয়ে মুখ, চোখ বা নাকে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৫. পুষ্টিকর খাদ্যতালিকা

শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডায়েটে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রাখুন। লেবু, কমলালেবু, আমলকী, পেয়ারা, এবং টমেটো ইত্যাদি ফল ও সবজি নিয়মিত খান। এগুলো শরীরকে ভিতর থেকে শক্তি জোগাবে।

৬. শ্বাসকষ্টে ইনহেলার রাখুন

যাদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে, তাদের বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। এই সময়ে ধুলোবালির কারণে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। ইনহেলার সঙ্গে রাখুন এবং শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৭. ফ্যান এবং এসি ব্যবহারে সতর্কতা

অনেক সময় দিনের বেলা গরম অনুভূত হলেও ফ্যান বা এসি চালাতে গিয়ে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা তৈরি হয়। এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখবেন না এবং প্রয়োজন ছাড়া ফ্যানের গতি খুব বেশি বাড়াবেন না।

বয়স এবং শিশুদের জন্য বাড়তি যত্ন

বয়স্ক ও শিশুরা শীতের রোগের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। বাচ্চাদের শীত থেকে দূরে রাখতে তাদের উষ্ণ পোশাক পরান। পাশাপাশি, বাড়িতে কেউ অসুস্থ থাকলে শিশুদের তার কাছাকাছি যেতে দেবেন না।

শীতকাল উপভোগ করতে হলে আগে নিজেকে সুস্থ রাখা প্রয়োজন। সতর্কতা অবলম্বন করে এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চললে শীতের মৌসুমে জ্বর-সর্দি বা গলাব্যথার মতো অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা এবং সামান্য সতর্কতাই এই শীতে আপনাকে রাখতে পারে সম্পূর্ণ সুস্থ ও সতেজ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে