ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটার হ্যারি ব্রুক আবারও প্রমাণ করলেন, প্রতিভা ও সুযোগের সঠিক মিশ্রণে বড় সাফল্য অর্জন সম্ভব। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টেস্টে তার সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি শুধু ইংল্যান্ডের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেওয়ার মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছে।

দ্বিতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৩১৯/৫। প্রথম ইনিংসে তারা নিউজিল্যান্ডের স্কোর থেকে মাত্র ২৯ রানে পিছিয়ে রয়েছে। ব্রুক অপরাজিত আছেন ১৩২ রানে, এবং তার সঙ্গে ক্রিজে রয়েছেন অধিনায়ক বেন স্টোকস (৩৭*)।

দিনের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের বোলাররা মেঘলা আকাশের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দারুণ সুইং বোলিং প্রদর্শন করলেও ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতা তাদের বড় ক্ষতি করেছে। ব্রুককে তারা চারবার জীবন দিয়েছেন—১৮, ৪১, ৭০ ও ১০৬ রানে। আর ব্রুকও সেই সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে একের পর এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।

এই ইনিংসের সুবাদে ব্রুক ইংল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম ২০০০ টেস্ট রানের কীর্তি গড়েছেন। তিনি ২২ টেস্টে এই মাইলফলক স্পর্শ করে ৯৬ বছর আগে হার্বার্ট সাটক্লিফের রেকর্ডের সঙ্গে নাম লিখিয়েছেন। তবে ইনিংসের হিসেবে সাটক্লিফ (৩৩ ইনিংস) ব্রুকের (৩৬ ইনিংস) চেয়ে এগিয়ে।

বিশ্ব টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ২০০০ রানের তালিকায় বলের হিসাবেও ব্রুক নতুন রেকর্ড গড়েছেন। তিনি ২৩৩০ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। তালিকার শীর্ষে আছেন বেন ডাকেট (২২৯৩ বল)।

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে তুলেছিল ৩৪৮ রান। কেন উইলিয়ামসনের অনবদ্য ৯৩ ও গ্লেন ফিলিপসের ৫৮ রানের ইনিংস তাদের সংগ্রহকে শক্ত ভিত্তি দেয়। তবে ইংল্যান্ডের পেসাররা দুর্দান্ত বল করে তাদের বড় স্কোর করতে দেয়নি। ক্রিস কার্স ও সাঈফ বশির সমান চারটি করে উইকেট শিকার করেন।

ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল চ্যালেঞ্জিং। ম্যাট হেনরি ও অভিষিক্ত নাথান স্মিথের সুইং বোলিংয়ে তাদের শুরুর ব্যাটাররা বিপদে পড়ে। জো রুট শূন্য রানে আউট হলে চাপ আরও বেড়ে যায়। তবে ওলি পোপের ৭৭ রানের ইনিংস ও হ্যারি ব্রুকের সেঞ্চুরি দলকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনে।

দিনের শেষে ব্রুক ও স্টোকস মিলে ৯৭ রানের অপরাজিত জুটি গড়ে ইংল্যান্ডকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন। ব্রুকের ইনিংসে ছিল ১০টি চারের পাশাপাশি ২টি বিশাল ছক্কা।

নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডিং ছিল তাদের জন্য হতাশাজনক। পুরো দিনজুড়ে তারা ছয়টি ক্যাচ মিস করেছে। বিশেষ করে ব্রুক ও স্টোকসকে জীবন দেওয়া তাদের জন্য বড় ব্যর্থতা। এই ভুলগুলো ম্যাচে তাদের অবস্থান দুর্বল করে তুলেছে।

ইংল্যান্ড এখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছে। তবু নিউজিল্যান্ড পুরোপুরি পিছিয়ে নেই। ফিল্ডিংয়ে উন্নতি আনতে না পারলে তাদের জন্য ম্যাচটি দ্রুতই হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।

ইংল্যান্ড: ৩১৯/৫ (ব্রুক ১৩২, পোপ ৭৭)*

নিউজিল্যান্ড: ৩৪৮ (উইলিয়ামসন ৯৩, ফিলিপস ৫৮, কার্স ৪/৬৪, বশির ৪/৬৯)